পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Aug 31, 2020, 3:37 PM IST

ETV Bharat / city

"দিদিকে বলো" কর্মসূচি কি সফল ?

গত বছর 30 জুলাই 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি শুরু হয় । এক বছর পার করে এই কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।

didi ke bolo project of mamata banerjee
'দিদিকে বলো' কর্মসূচি

কলকাতা, 30 অগাস্ট : "দিদিকে বলো" কর্মসূচি নিয়ে রাজ‍্য রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে বিতর্ক । বিরোধী দল BJP-র তরফে এটিকে ফেলিওর প্রোজেক্ট বলা হয়েছে । তবে তৃণমূল দাবি করেছে, সার্বিকভাবে সফল কর্মসূচি । রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাধারণ মানুষের উপকারে সেভাবে না লাগলেও এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সাফল্য পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল।

গত বছর 30 জুলাই "দিদিকে বলো" কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্যের সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ জানানোর জন্য একটি ফোন নম্বর ও ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছিল । ফোন নম্বরটি ছিল- 9137091370 । ওয়েবসাইটটি www.didikebolo.com । তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে অল্পদিনের মধ্যেই জনসংযোগের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা । মাত্র এক মাসের মধ্যে 10 লাখ 350 জন মানুষ অভিযোগ জানিয়েছিলেন । এরমধ্যে 42 শতাংশ শুধুমাত্র নিজেদের সমস্যার কথা জানান । প্রথম মাসে 161 জনের সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল । এরপর মাত্র আট মাস চলে এই কর্মসূচি ।

2 মার্চ থেকে দিদিকে বলোর বদলে হঠাৎ করে নতুন কর্মসূচি নেয় তৃণমূল কংগ্রেস । নাম দেয় "বাংলার গর্ব মমতা ।" দিদিকে বলো কর্মসূচির এক বছর পূর্তির পর পর অর্থাৎ অগাস্ট মাস থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে "দিদিকে বলো কর্মসূচি কি ফ্লপ ?" BJP নেতা রাহুল সিনহা "দিদিকে বলো" কর্মসূচিকে ফেলিওর প্রোজেক্ট বলেই অ্যাখ্যা দেন । এপ্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "দিদিকে বলো কার্যক্রম পুরোটাই অসফল । দিদির প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আস্থা, ভরসা নেই । সেই কারণে বাংলার মানুষ দিদিকে বলতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ।" আরেক BJP নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দিদি তো নিজেই অসফল । যে দিদি গরিব মানুষের কথা শোনেন না, বাংলা মানুষের কথা শোনেন না, বাংলার মানুষের তাঁর প্রতি আস্থা নেই ।"

তবে বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস । "দিদিকে বলো" কর্মসূচিকে সফল প্রোজেক্ট বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা । রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দিদিকে বলো" কর্মসূচি আমাদের নতুন রাস্তা দেখিয়েছে । যেসব কর্মী রাস্তায় নেমে কাজ করতেন না, তাঁরা এখন কাজ করছেন । অভিযোগ জানিয়ে প্রচুর মানুষ উপকৃত হয়েছেন । আমার মতে, দিদিকে বলো কর্মসূচি পুরোপুরি সফল । অধিকাংশ অভিযোগ সমাধানের জন্য মন্ত্রীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । যেমন বিদ্যুৎ পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগগুলি আমার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । খাদ্য দপ্তরের অভিযোগ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । গোটা দল ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করেছে । কিন্তু, সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় । যেমন বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে সমস্যার সমাধান আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় ।"

"দিদিকে বলো" কর্মসূচি নিয়ে এক বছর পর তরজা রাজনৈতিক মহলে

দিদিকে বলো কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের তরজা যাই থাকুক না কেন, এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজা গোপালধর চক্রবর্তীর বক্তব্য, "পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সকলেরই পরিষেবা পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে । বেশি সংখ্যক মানুষ পরিষেবা নিয়ে সন্তুষ্ট না হতে পারেন । একটা সরকারি কর্মসূচি । যেটা দলীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে । একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে বলো না বলে দিদিকে বলো বলা হয়েছে । অর্থাৎ এখানে দিদিই একমাত্র ভরসা ।" পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "বেশ কিছু মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা ফোন করে সন্তুষ্ট হয়েছেন । এঁদের পরিচয় সঠিকভাবে কেউ জানেন না । হতে পারে তাঁরা সত্যি সন্তুষ্ট হয়েছেন । আবার এসব সাজানো ঘটনাও হতে পারে । এটা বাস্তব যে, কিছু মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন । তবে বিরাট সংখ্যক মানুষের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details