কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: সম্প্রতি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মেয়াদ বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর। সেখানে বলা হয়েছে, 2021 সালের 31 অক্টোবর পর্যন্ত বাগবাজার মহিলা কলেজ ক্যালকাটার অধ্যক্ষা মহুয়া দাসকে পুনরায় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করা হল। পাশাপাশি, ওইদিনই আর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাড-হক কমিটির মেয়াদ অগাস্ট মাস পর্যন্ত করা হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই "আইনের পরিপন্থী" কাজ করা হয়েছে বলে মত শিক্ষক মহলের একাংশের।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে মহুয়া দাসকে পুনরায় নিয়োগ ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাড-হক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে কেন বিরোধিতা করছে শিক্ষক মহল? তাঁদের অভিযোগ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে থাকার সর্বোচ্চ বয়সসীমা 62 বছর। অথচ, মহুয়া দাসের বয়স গত বছর মার্চেই 62 বছর হয়ে গিয়েছে। আবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাড-হক কমিটি, মে কমিটি বোর্ড পরিচালনা করে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু, অ্যাড-হক কমিটির বর্তমান সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের 21 ফেব্রুয়ারি 68 বছর বয়স হয়ে যাচ্ছে। 2017 সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সংশোধিত আইন অনুযায়ী সভাপতি পদে থাকার বয়সসীমা 68 বছর। তাহলে অ্যাড-হক কমিটির মেয়াদ বাড়লেও, বয়সসীমা উত্তীর্ণ সভাপতিকে নিয়ে কী করা হবে তা অস্পষ্ট। আর এখানেই আপত্তি শিক্ষক মহলের।
আরও পড়ুন:সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু 4 মে
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, "উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে থাকার সর্বোচ্চ বয়সসীমা 62 বছর। আমরা জানতে পেরেছি যে বর্তমানে যিনি আছেন মহুয়া দাস, তাঁর বয়স 2020 সালের 28 মার্চ 62 বছর হয়ে গিয়েছে। যদি সংসদের সভাপতির বয়স সংক্রান্ত বিষয়টা সংশোধন না হয় তাহলে তিনি বৈথ সভাপতি নন। কারণ, এই সংশোধন বিধানসভায় বিল পাশ করে করাতে হয়। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত আমরা তা হয়েছে বলে আমরা কেউ জানি না।"
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়ে সৌদীপ্তবাবু বলেন, "মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে বসার সর্বোচ্চ বয়সসীমা 2017 সালে সংশোধন হয়ে 65 থেকে 68 বছর করা হয়। আমরা জানতে পেরেছি যে 2021 সালের 21 ফেব্রুয়ারি বর্তমান মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির বয়স 68 হয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বলে দিল অ্যাড-হক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কিন্তু, ওই অ্যাড-হক কমিটির যিনি সভাপতি তাঁর বয়স নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হল তা কোথাও বলল না।"
আরও পড়ুন:7-এ মোদির সভা হলদিয়ায়, 6 ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যজুড়ে পাঁচ "পরিবর্তন যাত্রা" বিজেপির
পাশাপাশি, যদি বয়সসীমা বাড়ানোর সংশোধনী বিল বিধানসভায় পাশ না করানো হয় সেক্ষেত্রে সংসদের সভাপতির পুনরায় নিয়োগ ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাড-হক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে বর্তমান সভাপতির মেয়াদ বৃদ্ধি "আইনের পরিপন্থী" বলে মত শিক্ষক মহলের। সৌদীপ্ত দাস বলেন, "আমরা যে বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি সেটা কিন্তু দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি। বয়স বাড়ানোর বিষয়টি গেজেট বিজ্ঞপ্তি হতে হবে। 68-র পরেও রাখতে হলে বিধানসভায় বিল পাশ করাতে হবে। যতক্ষণ না বয়সের বিষয়টি সংশোধন না করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত 62 বা 68 বছর হয়ে গেলে আর সভাপতি পদে থাকার যোগ্যতা থাকে না। আমাদের বক্তব্য, কী করে আইন সংশোধন না করে সংসদের সভাপতিকে পুনরায় নিয়োগ করা হয় বা একই সভাপতিকে রেখে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাড-হক কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়? এটা আইনবিরোধী। যা আইন আমরা জানি এটা তার পরিপন্থী যদি বিধানসভায় সংশোধন না করা হয়।"