পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

৭ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ না দিলে বেতন বন্ধ হবে DM, BDO-র : হাইকোর্ট

বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল স্বামী ভবেশ মণ্ডলের। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়েছেন স্ত্রী সুন্দরী পাত্র ও তাঁর সন্তানরা। রাজ্য সরকারের স্কিম অনুযায়ী টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা পাননি সুন্দরী। DM, BDO, SDO-র অফিসে ঘুরেও কোনও লাভ হয়নি। এরপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। অবশেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বিচারপতি দেবাংশু বসাক বিষয়টি শোনার পর DM-কে নির্দেশ দেন সুন্দরীর কাগজপত্র দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু নানা কারণে তা হয়নি। তাই সাতদিনের মধ্যে সুন্দরীকে তাঁর প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের ২ লাখ টাকা না দেওয়া হলে জেলাশাসক (আলিপুর) ও BDO-র (সোনারপুর) বেতন বন্ধের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক।

হাইকোর্ট

By

Published : Mar 2, 2019, 3:08 AM IST

কলকাতা, ২ মার্চ : বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল স্বামী ভবেশ মণ্ডলের। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়েছেন স্ত্রী সুন্দরী পাত্র ও তাঁর সন্তানরা। রাজ্য সরকারের স্কিম অনুযায়ী টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা পাননি সুন্দরী। DM, BDO, SDO-র অফিসে ঘুরেও কোনও লাভ হয়নি। এরপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। অবশেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বিচারপতি দেবাংশু বসাক বিষয়টি শোনার পর DM-কে নির্দেশ দেন সুন্দরীর কাগজপত্র দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু নানা কারণে তা হয়নি। তাই সাতদিনের মধ্যে সুন্দরীকে তাঁর প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের ২ লাখ টাকা না দেওয়া হলে জেলাশাসক (আলিপুর) ও BDO-র (সোনারপুর) বেতন বন্ধের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক।

সোনারপুর থানা এলাকার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ভবেশ মণ্ডল। ২০১৫ সালে বাগানে কাজ করার সময় তাঁকে সাপে কামড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে চিত্তরঞ্জন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিমেষে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে গোটা পরিবার। দুই ছেলে (৩ বছরের) এবং এক মেয়েকে ৯ (বছরের) নিয়ে অথৈ জলে পড়েন সুন্দরী পাত্র।

এরপর ২০১৬ সালে সুন্দরী জানতে পারেন রাজ্য সরকারের একটি স্কিম আছে। তাতে বলা হয়েছে, কেউ যদি সাপের কামড়ে বা বজ্রপাতে মারা যান এবং তিনি যদি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হন তাহলে তাঁর পরিবার ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারে। এরপর তিনি ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ঘোরেন। BDO (সোনারপুর), DM (আলিপুর), SDO (বারুইপুর)- সবার দপ্তরেই যান সুন্দরী। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে DM-কে একটি চিঠি লিখে আর্জি জানান। এরপর তিনি আরও তিন মাস অপেক্ষা করেন। তারপর ২০১৮ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি দেবাংশু বসাক বিষয়টি শোনার পর DM-কে নির্দেশ দেন সুন্দরীর কাগজপত্র খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে।

হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর জেলাশাসক, সোনারপুরের BDO-কে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট দিতে বলেন। BDO জানান যে ভবেশ মণ্ডলের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা আছে তাঁর মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে। BDO, SDO-কে (বারুইপুর) ইতিবাচক রিপোর্টই দেন। এরপরও ক্ষতিপূরণের টাকা মেলেনি। গত বছর অগাস্ট মাসের পর থেকে ওই মহিলা আবার ঘুরতে শুরু করেন। তিনি ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে পুনরায় DM-কে চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি জানান, বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন ১ মাসের মধ্যে টাকাটা যাতে পান তার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। শেষে আবার হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই মহিলার আইনজীবী।

গতকাল মামলাটি আবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে উঠলে মামলাকারীর আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরি ঘটনাটি উল্লেখ করেন। পুরো প্রক্রিয়া শোনার পর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। সঙ্গে সঙ্গে তিনি নির্দেশ দিয়ে বলেন, "আগামী ৭ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে যদি ওই মহিলা টাকা না পান তাহলে DM (আলিপুর) ও BDO (সোনারপুর) দু'জনের বেতন বন্ধ করে দেব।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details