কলকাতা, 11 মার্চ: পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার ও পরীক্ষার আগে বা পরীক্ষা চলাকালীন 'প্রশ্নফাঁস' রুখতে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। মোবাইল সহ ধরা পড়লে পরীক্ষার্থীর ওইদিনের পরীক্ষা বাতিল করার বিধান আগে থেকেই ছিল। এবছর থেকে প্রশ্নফাঁস ও মোবাইল রোখার ক্ষেত্রে কোনও পরীক্ষাকেন্দ্র তথা স্কুলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ পেলে ওই স্কুলের অনুমোদন বাতিল করা হতে পারে। এমনই হুঁশিয়ারি দিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এ ছাড়া, রাজ্যের বেশ কিছু জেলার সংবেদনশীল এলাকায় গত বছরের মতো ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে সংসদ। পাশাপাশি, রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে ওই সমস্ত জেলার সংবেদনশীল পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে মেটাল ডিটেক্টরও দিয়েছে সংসদ।
12 মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে 2020 সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে 27 মার্চ পর্যন্ত। একইসঙ্গে চলবে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও। এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা 7.90 লক্ষ। যা গত বছরের মোট পরীক্ষার্থীর তুলনায় পাঁচ হাজার কম বলে জানাচ্ছেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। তিনি জানান, ছাত্রদের থেকে ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় 72 হাজার বেশি। 25টি জেলার মধ্যে 24টি জেলায় ছাত্র পরীক্ষার্থীদের থেকে ছাত্রী পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। মোট পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা 734টি ও রাজ্যজুড়ে মোট 2185টি কেন্দ্রে হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় 19 লক্ষ।
প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তার জন্য ব্য়বস্থা শিক্ষা সংসদের
প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করার জন্য প্রতি বছরের মতো এ বছরও একাধিক পদক্ষেপ করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এ বিষয়ে সভাপতি মহুয়া দাস বলেন, " প্রশ্নপত্রের প্যাকেটে কম্পিউটার জেনারেটেড নম্বর অর্থাৎ বারকোডের মাধ্যমে আমরা যেরকম বিগত বছরগুলিতে করেছিলাম সেই রকম ট্রাকিং সিস্টেম ছাড়াও, ম্যানুয়াল ট্রাকিং করে আরও জোরদার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভ্যেনু সুপারভাইজার, সেন্টার ইনচার্জ ও সেন্টার সেক্রেটারি ছাড়া অন্য কারও মোবাইল দিয়ে ভ্যেনুতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই তিনজন ব্যতীত কেউ মোবাইল নিয়ে ভ্যেনুতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এবছর সংসদের হেডকোয়ার্টার থেকে রাজ্যের প্রায় 250টি সংবেদনশীল ভেন্যুতে স্পেশাল কাউন্সিল নমিনি থাকছেন। তারা প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে এইসব ভেন্যুর মূল প্রবেশপথে উপস্থিত থাকবেন এবং ভেনু সুপারভাইজারকে সাহায্য করবেন। প্রয়োজনবোধে মোবাইল নিয়ে ঢুকছে এমন সন্দেহভাজনকে খুঁজে বার করার কাজও করবেন তিনি। যদি কোনও পরীক্ষার্থী মোবাইল সহ ধরা পড়ে তবে তৎক্ষণাৎ ওই পরীক্ষার্থীর ওইদিনের পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে, টোকাটুকি বা অসৎ উপায় অবলম্বন করতে গিয়ে কেউ ধরা পড়ে তাহলে তার সম্পূর্ণ পরীক্ষা এবং সংসদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।"
স্কুলের গাফিলতি প্রমাণ হলে বাতিল হবে রেজিস্ট্রেশন
স্কুলের প্রতিও যদি গাফিলতির অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সেই স্কুলের রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত বাতিল করে দেওয়া হতে পারে বলে আজ জানিয়ে দেন সংসদ সভাপতি। মহুয়া দাস বলেন, "এমনকি যদি স্কুল বা বিদ্যালয়ের তরফে কোনও গাফিলতির কথা বা অভিযোগ আমাদের কানে আসে, কোনও কোনও জেলায় দেখা যায় টোকাটুকিটা খানিকটা ছাত্র-ছাত্রীরা করে থাকে, আবার একটা গাফিলতি স্কুলের পক্ষ থেকেও থাকে। ইনভিজিলেটররা সব সময় সজাগ থাকেন না বা হয়তো কড়া ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ভেন্যু সুপারভাইজার আইনকানুনগুলো ঠিকমতন প্রয়োগ করতে পারেন না। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগে সেই স্কুলের অ্যাফিলিয়েশন পরের বছর নাও থাকতে পারে।"
চিফ ইনভিজিলেটর নিয়োগ করছে সংসদ