কলকাতা, 19 জুলাই : একইদিনে জোড়া অস্বস্তি রাজ্য সরকারের ৷ হালিশহর ও বনগাঁ পৌরসভা নিয়ে হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনা ৷
বনগাঁ ও হালিশহর পৌরসভা নিয়ে কিছুদিন ধরেই চলছে টানাপোড়েন ৷ অনাস্থা ভোটকে কেন্দ্র করে দিন কয়েক আগেই বনগাঁ পৌরসভায় খণ্ডযুদ্ধ চলেছিল ৷ আজ পৌরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলররা আপনার সঙ্গে নেই ৷ আপনি জনগণের প্রতিনিধি ৷ আস্থাভোটের মুখোমুখি হন ৷ এত ভয় পাচ্ছেন কেন ? সত্যিই চেয়ারম্যান অত নির্লজ্জ হন কীভাবে ? এখানেই শেষ হয়নি ৷ এরপর বনগাঁ পৌরসভার আস্থাভোট নিয়ে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, প্রয়োজনে জেলশাসক বা মহকুমাশাসকের দপ্তরে করানো হোক আস্থাভোট ৷ আগামী তিনদিনের মধ্যে এবিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি ৷
বনগাঁ পৌরসভা নিয়ে বিচারপতির আরও মন্তব্য, সরকার ভুল করলে তা শুধরে দেব ৷ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, আস্থাভোটের দিন বনগাঁয় পৌরসভার অনেক কাউন্সিলরকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তা জলের মতো স্বচ্ছ ৷ এপ্রসঙ্গে রাজ্য প্রশাসনকেও ভর্ৎসনা করেছে হাইকোর্ট ৷ সূত্রের খবর, প্রয়োজনে পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে বনগাঁ পৌরসভার আস্থাভোট হতে পারে ৷
আরও পড়ুন : বনগাঁয় আস্থা ভোটে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য হয়েছে অভিযোগে আদালতে BJP
গত 16 জুলাই বনগাঁ পৌরসভার আস্থাভোট ঘিরে ধুন্ধুমার বাধে ৷ অনেক কাউন্সিলর আস্থাভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেনি বলেও অভিযোগ ওঠে ৷ এরপরই BJP-র অভিযোগ ছিল, পুলিশ দিয়ে তাদের দুই কাউন্সিলরকে আস্থাভোটের দিন আটকে রাখা হয়েছিল ৷ সেই বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত ৷ আজ চূড়ান্ত রায় না দিলেও ফের অনাস্থা ভোট হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ বিচারপতির এদিনের মন্তব্যে আশার আলো দেখছে BJP ৷ কারণ, ফের ভোট হলে যে তাদেরই জয় হবে এবিষয়ে একপ্রকার নিশ্চিত গেরুয়া শিবির ৷ 22 আসনের বনগাঁ পৌরসভার 14 জন কাউন্সিলর BJP-তে যোগ দিয়েছিলেন ৷ যদিও পরে 3 জন ফিরে আসেন তৃণমূলে ৷ বিচারপতির মন্তব্যের পর অবশ্য রাজ্য প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, BJP সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছে ৷ সেদিন BJP কাউন্সিলররা নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ করেছিলেন বলেই দাবি তৃণমূল শিবিরের ৷
বনগাঁর পাশাপাশি হালিশহর নিয়েও তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের ৷ আজ তিনটের সময় হালিশহর পৌরসভায় ডাকা অনাস্থা বৈঠকে শুধু স্থগিতাদেশই দেওয়া হয়নি ৷ বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ আগামী 23 জুলাই পর্যন্ত কোনও অনাস্থা বৈঠক ডাকা যাবে না ৷ এপ্রসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, কেন এত তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে ৷ হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠানো নিয়েও হাইকোর্ট তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে ৷
আরও পড়ুন : হালিশহর পৌরবোর্ড "পুনর্দখল" করল তৃণমূল
অভিযোগ ছিল, আইন না মেনে অনাস্থা মিটিং ডাকা হয়েছে ৷ আসলে এটা ছিল সম্পূর্ণ ভুয়ো ৷ সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতেই বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন এবং নির্দেশ দেন আগামী 23 জুলাইয়ের আগে তাড়াহুড়ো করে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না ৷