কোরোনা হাই অ্যালার্ট : হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্বাস্থ্যদপ্তরের - COVID-19
কোরোনা মোকাবিলার জন্য় রাজ্য়ের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর । বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে । পাশাপাশি ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে ।
কলকাতা, 5 মার্চ: দেশে যেভাবে COVID-19-এ আক্রান্ত একের পর এক রোগীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, তার জেরে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে বলে মনে করছে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট । রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর ।
কোরোনা ভাইরাসের মোকাবিলার জন্য় শুরুতেই কলকাতার বেলেঘাটা ID হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয় । পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে কলকাতার পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ রাজ্যের মোট 14 টি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চালু করার কথা বলে স্বাস্থ্যদপ্তর । 16 টি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে 92 টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্যদপ্তর । কোরোনার মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ।
এ দিকে কোরোনায় আক্রান্ত একের পর এক রোগীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে দেশে । পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে ৷ এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "COVID-19 ভাইরাস 64 টি দেশকে এফেক্ট করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) । এ দেশে আরও কয়েকটি কেস পাওয়া গিয়েছে । আমাদের ডিপ কনসার্ন রয়েছে । যে কোনও মুহূর্তে কোরোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী আসতে পারেন । তখন যাতে প্যানিক তৈরি না হয়, তারজন্য প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ।"
COVID-19-এর মোকাবিলায় প্রয়োজনে যাতে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা যায়, তারজন্য এ রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল এবং মহাকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর ৷ প্রয়োজনে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করার জন্য় স্থান নির্বাচন করে রাখতে বলেছে । শুধুমাত্র স্থান নির্বাচন নয় । যদি প্রয়োজন দেখা দেয় তবে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করার জন্য় ভেন্টিলেটর মেশিন যাতে বসানো যায় তারজন্য ইলেকট্রিকের ব্যবস্থাও করে রাখতে বলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর । পাশাপাশি ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে । কোনও রোগীর ক্ষেত্রে কোন ধরনের উপসর্গ থাকলে COVID-19 নির্ণয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট রোগীর সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে, তারজন্য কীভাবে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে, এ সব বিষয়ও বলে দেওয়া হয়েছে ওই গাইডলাইনে । স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তী গতকাল বলেন, "এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত COVID-19 ভাইরাস আক্রান্ত এমন পজিটিভ কোনও কেস পাওয়া যায়নি । যদিও দেশে এখনও পর্যন্ত 28 জনের মধ্য়ে COVID-19-এর সংক্রমণ ধরা পড়েছে । সকলের জন্য এটা হাই অ্যালার্ট ।" পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ।
এ দিকে, বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতার দমদম এবং উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা বিমানবন্দরে গতকাল পর্যন্ত মোট 42,913 জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে । ভারতের সঙ্গে নেপাল এবং বাংলাদেশের সাতটি স্থলপথের বর্ডারে গতকাল পর্যন্ত 87,871 জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তিনটি জাহাজ বন্দরে 3,132 জন ক্রিউ মেম্বারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে । বুধবার পর্যন্ত কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ থেকে এ রাজ্যে আগত 1,252 জন পর্যটককে চিহ্নিত করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে । তাদের মধ্যে 115 জনের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণে রাখার সময় শেষ হয়েছে । বুধবার পর্যন্ত এরাজ্যে 1,136 জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে । এখনও পর্যন্ত 29 জনের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে । প্রতিটি পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ।