কলকাতা, 31 মার্চ : নভেল কোরোনায় রাজ্যের 22তম আক্রান্তের এখনও পর্যন্ত কোনও ট্রাভেল হিস্ট্রি পাওয়া যায়নি । তবে, কীভাবে সংক্রমণ ঘটল, তার খোঁজ জারি রেখেছে স্বাস্থ্য দপ্তর । 77 বছর বয়সি আক্রান্ত এই প্রৌঢ় কলকাতার একজন ব্যবসায়ী । তাঁকে আপাতত বেসরকারি একটি হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে ।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত 28 মার্চ এই প্রৌঢ়কে উল্টোডাঙ্গার কাছে EM বাইপাসের ধারে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভরতি করানো হয় । তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন । চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায়, তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় । 29 মার্চ রাতে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে জানা যায়, এই প্রৌঢ় COVID-19-এ আক্রান্ত ।
এই আক্রান্তকে ভেন্টিলেটরের সাপোর্টে রাখা হয়েছে । ট্রাভেল হিস্ট্রি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছিল স্বাস্থ্য দপ্তর । এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় কুমার চক্রবর্তী জানান, "এখনও পর্যন্ত ওই আক্রান্তের কোনও ট্রাভেল হিস্ট্রি পাওয়া যায়নি ।" এছাড়া সঠিক তথ্য না পাওয়া গেলে আপাতত কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয় । খোঁজ চালানো হয়েছে ।
বেসরকারি এই হাসপাতালে আরও এক COVID-19 আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে । 66 বছর বয়সি এই প্রৌঢ় বরাহনগরের বাসিন্দা । জ্বর থাকায় 26 মার্চ থেকে লেকটাউনে অবস্থিত বেসরকারি একটি নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা চলছিল । 29 মার্চ স্বাস্থ্য দপ্তর জানায়, এই প্রৌঢ় COVID-19-এ আক্রান্ত । গতকাল এই আক্রান্তকে EM বাইপাসের ধারে অবস্থিত বেসরকারি ওই হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় ।
লেকটাউনের ওই নার্সিংহোমে এই আক্রান্তের চিকিৎসার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদেরকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এই আক্রান্তের শারীরিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল রয়েছে । COVID-19-এর সংক্রমণ সন্দেহে এই আক্রান্তের ভাইকে 29 মার্চ রাতে পঞ্চসায়রে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভরতি করানো হয় ।
সোমবার রাতে আক্রান্তের ভাইয়ের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে নেগেটিভ এসেছে । সূত্রের খবর, বরাহনগরের বাসিন্দা এই আক্রান্ত এবং তাঁর ভাই হোসিয়ারী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত । ব্যবসায়িকসূত্রে মধ্যপ্রদেশে তাঁদের যাওয়া-আসা ছিল ।
পঞ্চসায়রের বেসরকারি ওই হাসপাতালে আরও এক COVID-19-এ আক্রান্ত । তিনি নয়াবাদের বাসিন্দা 66 বছর বয়সি এক প্রৌঢ় । তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে । 9 দিনের জ্বর নিয়ে তিনি 23 মার্চ ওই হাসপাতালে ভর্তি হন । 12 মার্চ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেদিনীপুরে আত্মীয়ের বাড়ি এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন । 14 মার্চ তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন ।
হাসপাতাল সূত্রানুযায়ী, আক্রান্ত এই প্রৌঢ়র শারীরিক অবস্থা সংকটে রয়েছে । তাঁর ইউরিনের সমস্যা রয়েছে । 29 মার্চ রাতে সল্টলেকে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে এক COVID-19 আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায় । শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, সোমবার বিকাল থেকে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে ।
COVID-19-এ আক্রান্ত 59 বছর বয়সি এই ব্যক্তি হুগলির শেওড়াফুলির বাসিন্দা । স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে, জ্বর এবং সর্দি-কাশির সমস্যা থাকায় সল্টলেকের বেসরকারি ওই হাসপাতালে এই ব্যক্তিকে 28 মার্চ ভরতি করানো হয় । 16 মার্চ জ্বরে আক্রান্ত হন । সঙ্গে সামান্য শ্বাসকষ্ট ছিল । 22 মার্চ থেকে তাঁর সমস্যা বাড়তে থাকে ।
জানা গেছে, এই আক্রান্তের ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশনের সমস্যাও রয়েছে । সল্টলেকের এই হাসপাতালে ভরতি করানোর আগে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভরতি করানো হয়েছিল । 16 মার্চের আগে কর্মসূত্রে তিনি দুর্গাপুরে গেছিলেন বলেও জানা গেছে । ওই ব্যক্তির COVID-19 পজিটিভ ধরা পড়ায় বেসরকারি ওই নার্সিংহোমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।
এ দিকে, সোমবার দুপুরে NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে এক রোগীর মৃত্যু হয় । ওই রোগী কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না, তা নির্ণয়ের জন্য তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে । আজ রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে ।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, মৃত এই রোগী উত্তর 24 পরগনার বনগাঁ এলাকার বাসিন্দা । 45 বছরের মহিলাকে গত রবিবার সকালের দিকে COVID-19-এর সংক্রমণ সন্দেহে ভরতি করানো হয়েছিল । জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল । স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, মৃত এই রোগী সম্প্রতি চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতাল থেকে ফিরেছিলেন । তিনি অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন । চেন্নাই থেকে ফেরার পরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন । শুরু হয় শ্বাসকষ্ট । সমস্যা বাড়তে থাকায়, গত রবিবার তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল ।