কলকাতা, 21 অগস্ট : গত 15 অগস্ট আফগানিস্তানের (Afghanistan) রাজধানী কাবুলের (Kabul) দখল নিয়েছে তালিবান ৷ শুধুমাত্র পঞ্জশিরেই চলছে প্রতিরোধ ৷ দেশের বাকি অংশে তৈরি হয়েছে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ৷ এই ঘটনাক্রমের মধ্যেই 19 অগস্ট ছিল আফগানিস্তানের 103 তম স্বাধীনতা দিবস (Independence Day) ৷ ওই দেশে এই দিনটি পালন করা না গেলেও তা উদযাপিত হল কলকাতায় ৷
অল ইন্ডিয়া পাকতুন জিরগা এ হিন্দের (All India Pakhtoon Jirga e Hind) তরফে কলকাতায় এবার আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয় ৷ আর এই সংগঠনের যিনি সভানেত্রী, তিনি জন্মসূত্রে আফগান হলেও পারিবারিক ভাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তরাধিকার বহন করছেন ৷
আরও পড়ুন :Taliban Kill Journalist's Relative: জার্মান সাংবাদিককে না-পেয়ে আত্মীয়কে হত্যা তালিবানের, পালিয়ে বাঁচলেন বাকিরা
তাঁর নাম ইয়াসমিন নিগার খান (YasminNigar Khan)৷ তিনি সীমান্ত গান্ধির (Frontier Gandhi) নাতনি ৷ আব্দুল গফ্ফর খান (Abdul Gaffar Khan) বা সীমান্ত গান্ধির ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কী অবদান, তা বোধহয় নতুন করে ব্যাখ্যা করার নেই ৷ সেই প্রবাদপ্রতীম ব্যক্তিই দত্তক নিয়েছিলেন ইয়াসমিন নিগার খানের বাবাকে ৷
তিনি 1986 সালে একবারই বাবার সঙ্গে আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু ওই দেশের প্রতি তাঁর টান এখনও অটুট ৷ তাই সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তিনি চিন্তিত ৷ সেই কারণেই এবার কলকাতায় আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হল বলে তিনি জানালেন ৷ তাঁর কথায়, এটা এক ধরনের প্রতিবাদ ৷ এর আগে কখনও তাঁরা কলকাতায় আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন করেননি ৷ এবারই প্রথম করলেন তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য ৷
আরও পড়ুন :Afghanistan : কাজ যেতে বাধা দিচ্ছে তালিবান, অভিযোগ মহিলা সাংবাদিকের
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত হলেও সেখানে যে এখনও কেউ কেউ স্বাধীনতা দিবস পালনের চেষ্টা করেছেন, তাতে খুশি ইয়াসমিন নিগার খান ৷ তিনি বললেন, ‘‘আমাদের কাছে আজ খবর এসেছে যে ওই দেশেও রাস্তায় নেমে বহু মানুষ পতাকা উত্তোলন করেছে অনেক জায়গায় স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়েছে । আমরা তাদের জানিয়ে দিতে চাই যে তাদের কেউ চায় না ৷ আমরা আমাদের পুরনো সরকারকেই চাই ।’’
তাই এখনই আফগানিস্তান তালিবানের দখলে চলে গিয়েছে বলে মানতে নারাজ সীমান্ত গান্ধির নাতনি ৷ তবে একই সঙ্গে তিনি এটাও স্বীকার করছেন যে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বারবার এই ধরনের লড়াই প্রভাব ফেলছে আফগান জনজীবনে ৷ তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ 44 সাল ধরে যুদ্ধ আফগানিস্তানের মাটিকে জেরবার করে দিয়েছে । কখনও মুজাহিদিন আবার কখনও তালিবানের নামে এই যুদ্ধ হয়ে চলেছে ওই দেশে । তাই এটা কখনোই বলা ঠিক হবে না যে আজকে ওই দেশে তালিবান একেবারে ঢুকে পড়েছে । আমরা দেখেছি যে তালিবান যখন ওখানে পতাকা নামানোর চেষ্টা করেছিল, সেই পতাকা নামিয়ে ফেলার জন্য কী ধরনের বিক্ষোভ দেখিয়েছিল সাধারণ মানুষ ।’’
তালিবান দখলদারির প্রতিবাদে প্রথমবার কলকাতায় আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস পালন আরও পড়ুন :Taliban: কান্দহার-হেরাটে বন্ধ ভারতীয় কনস্যুলেটে হানা তালিবানের, নথির খোঁজে তল্লাশি
যদিও চিন বা রাশিয়ার মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই তালিবানের পাশে থাকার বার্তা দিতে শুরু করেছে ৷ ফলে সেখানে তালিবানি শাসন ঠেকানো যাবে ? এই প্রশ্নই আপাতত ঘুরছে সর্বত্র ৷ যদি ইয়াসমিন নিগার খানের মতে, বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যখন তালিবানের বিরুদ্ধে রয়েছে, তখন চিন-রাশিয়ার সমর্থনে কোনও কাজ হবে না ৷