কলকাতা, ২০ মার্চ : অনশন শুরুর ২০ দিন পর মাথার উপর ত্রিপলের ছাউনি পেলেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা। পাশাপাশি কলকাতা পৌরনিগমের তরফে গতকাল থেকে একটি বায়ো টয়লেটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনশন দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবরকম ব্যবস্থাই করছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
গত কয়েকদিন প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে ত্রিপল হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল ধর্মতলায় প্রেস ক্লাবের কাছে অনশনরত SSC চাকরিপ্রার্থীদের। শেষমেশ পুলিশের অনুমতি মেলে। পুলিশের অনুমতি নিয়েই গতকাল থেকে ত্রিপল টাঙিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ঘণ্টার রিলে অনশন শুরু করেছিলেন ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভের ওয়েটিং লিস্টে থাকা SSC চাকরিপ্রার্থীরা। দাবি একটাই, শূন্যপদ আপ-টু-ডেট করে অনশনকারীদের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু অনশনের ২০ দিন হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত দাবি মানা তো দূর, দ্বিতীয়বার প্রশাসন বা সরকারের সঙ্গে আলোচনাতে পর্যন্ত বসতে পারেননি অনশনকারীরা। দাবি না মেটা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যেতে চান তাঁরা। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মধ্যে গর্ভপাত হয়েছে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক চাকরিপ্রার্থীর। অনশনকারীদের দাবি, তাঁদের মধ্যে একজনের ডেঙ্গিও হয়েছে। কিন্তু যাই হয়ে যাক, সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন।
এক চাকরিপ্রার্থী অর্পিতা দাস বলেন, “আমাদের অনশন আজ ২০ দিনে পড়ল। আমরা কিছুদিন আগে টানা অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু, এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। কারণ, আমাদের এখানে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের এক চাকরিপ্রার্থীর খাদ্যনালীতে ইনফেকশন হয়ে যায়। যার ফলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে আমরা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে ফের রিলে অনশন করা হবে। কারণ, এটা একটা দীর্ঘসূত্রতার দিকে এগোচ্ছে এবং প্রশাসনের কোনও সহায়তা বা সরকার পক্ষের কোনও সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না এখনও পর্যন্ত। তার ফলে অনেকদিন এখানে বসতে হবে ভেবে আমরা অনশনটাকে আবার রিলে অনশনের দিকে নিয়ে এসেছি।"
অনশনের ২০তম দিনের পরিস্থিতি কী? অর্পিতা দাস বলেন, “পরিস্থিতি একই রকম রয়েছে। দু'দিন আগে ঝড়বৃষ্টিতে আমাদের খুবই অসুবিধা হয়েছিল। তারপরে এখানে আমরা ত্রিপলের ছাউনির ব্যবস্থা করি। এতে দিনের বেলায় আমাদের একটু হলেও স্বস্তি মিলছে। এছাড়া আমাদের পরিস্থিতির আর কোনও উন্নতি হয়নি। আমরা পুলিশের কাছে আবেদন করেছিলাম যে আমরা এভাবে আর থাকতে পারছি না। তারা সম্মতি দেওয়াতে আমরা এই ছাউনিটি লাগিয়েছি। ছাউনির পাশাপাশি অনশনকারীদের আর একটা বড় অসুবিধা ছিল মেয়েদের শৌচালয়। আমরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে আজ বায়ো টয়লেটের জন্য লালবাজারে পুলিশের কাছে আবেদন করেছি। আজকে থেকেই এই বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করা হল।"