কলকাতা, 15 ফেব্রুয়ারি:নবান্ন অভিযানের সময় ''লাঠিচার্জে আহত'' হওয়া যুবকের মৃত্যু হল। আজ সকালে মইদুল ইসলাম মিদ্যা নামে বছর 32-এর যুবকের মৃত্যু হয়েছে । দম্ভ দেখিয়ে সরকার খুন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী ।
গত বৃহস্পতিবার বাম ছাত্র ও যুবদের নবান্ন অভিযানে পুলিশি লাঠিচার্জের সময় জখম হন মইদুল । আজ সকালে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় । তিনি বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা ছিলেন। এলাকায় তিনি ফরিদ নামে পরিচিত। পেশায় তিনি অটোচালক। বাড়িতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও তিন মেয়ে রয়েছে ।
বামেদের অভিযোগ, নবান্ন অভিযানে দিন পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি । প্রথমে তাঁকে ডাক্তার ফুয়াদ হালিমের অধীনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় । রবিবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে । পরে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সেখানেই সোমবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর । দলের রাজ্য নেতৃত্ব হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন । চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, পুলিশের লাঠির আঘাতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের । লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই এই বিষয়ে মন্তব্য করবে তারা ।
আরও পড়ুন:বিতর্ক পেরিয়ে সমাবর্তনে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাবে বিশ্বভারতী
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে জ্বালাময়ী আন্দোলন হবে । অপরদিকে, সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন, ''ক্ষমতা দেখিয়ে, দম্ভ দেখিয়ে ওকে খুন করেছে সরকার । আর কত লাস চাই সরকারের। মইদুল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন ।''
নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত যুবকের মৃত্যু মইদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "পুলিশ ধীরে ধীরে হিংস্র হয়ে উঠছে । আমাদের নবান্ন অভিযানেও পুলিশ লাঠি মারে। বাম ছাত্র-যুব আন্দোলনেও পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল । এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই । গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না । পুলিশের উচিত ছিল আন্দোলনকারীদের আটকানো । লাঠি দিয়ে মেরে ফেলা নয় । রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই ।"
নবান্ন অভিযান ঘিরে 11 ফেব্রুয়ারি ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় কলকাতায়। কর্মসংস্থান ও শিল্পের দাবিতে এবং রাজ্যে সরকার বদলের ডাক দিয়ে নবান্ন অভিযান কর্মসূচি ছিল 10টি বামপন্থী যুব ও ছাত্র সংগঠনের। ধর্মতলায় অ্যালুমিনিয়াম শিট দিয়ে তৈরি ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপরেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ছোড়ে পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বেশ কয়েকজন বাম ছাত্র ও যুব সমর্থক আহত হন। এর প্রতিবাদে শুক্রবার 12 ঘণ্টার বাংলা বনধ পালন করে বাম সংগঠনগুলি। বামেদের ডাকা ধর্মঘটকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেসও।