কলকাতা, 31 মে : এও এক চা-ওয়ালার গল্প । তবে তিনি কোন রাজনৈতিক নেতা নন । তিনি শুধুই একজন চা-ওয়ালা । তবে অবশ্যই তিনি ব্যতিক্রমী । আর এই ব্যতিক্রমী চা-ওয়ালার চায়ের স্বাদে মজেছেন এক সাংসদ । কি জানতে ইচ্ছা করছে কার কথা বলছি !
দাঁড়ান তা তো জানাবই । তার আগে আরও কিছু তথ্য দিই । ইদানিং পশ্চিমবঙ্গে দুয়ারে সরকার চালু হওয়ার পর থেকে দুয়ারে শব্দটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে । যেমন, সরকার দিচ্ছে দুয়ারে রেশন । রাজনৈতিক নেতাদের হুমকিতেও দুয়ারে প্রহার শুনেছেন রাজ্যবাসী । এই চা-ওয়ালা আবার দুয়ারে চা নিয়ে হাজির ।
এবার হেঁয়ালি ছেড়ে এই চা-ওয়ালার পরিচয়ে আসা যাক । বছর তিরিশের সাইনুল আলি ওরফে বলাই । এলাকার মানুষ তাঁকে এক ডাকে এই নামেই চেনে । আগে পুরসভায় কাজ করতেন তিনি । তবে শারীরিক অসুস্থতার জন্য সেই কাজ ছাড়তে হয় তাঁকে । এই মুহূর্তে স্ত্রী সন্তান নিয়ে এই চায়ের ব্যবসাই একমাত্র সম্বল তাঁর । এর উপর নির্ভর করেই ছেলেকে পড়াচ্ছেন উত্তর দমদমের এই চা-ওয়ালা । হঠাৎ করে তাঁর চায়ের নাম কেন দিলেন দুয়ারে চা ।
এ প্রসঙ্গে বলাই বলেন, "দু বছর প্রায় করোনা আমাদের জীবনযাত্রা অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে । লকডাউনের সময় থেকেই আমি সরাসরি চা নিয়ে পৌঁছে যাই মানুষের দরজায় দরজায় । কারণ তখন মানুষ বাইরে বের হতে পারতেন না । আমি যেতাম দরজায় চা খাওয়াতে । এইভাবে করতে করতেই পরবর্তীতে দুয়ারে সরকারের অনুকরণে আমার এই চায়ের নাম দিই দুয়ারে চা ।" এই মুহূর্তে বলাই সারা দিনে প্রায় দেড়শ বাড়িতে গিয়ে চা বিক্রি করেন । এর মধ্যে আবার বাঁধা খরিদ্দার 30 থেকে 35টি পরিবার ।
দুয়ারে চা নিয়ে হাজির বছর তিরিশের সাইনুল আলি ওরফে বলাই আরও পড়ুন :World Bicycle Day: বিশ্ব বাইসাইকেল দিবসের প্রাক্কালে শহরে 2 যুবককে সম্মাননা, কেন ?
বলাই এসব বলতে বলতেই সৌগত রায়ের প্রসঙ্গ তোলেন । গতকাল রাস্তায় বেরিয়ে হঠাৎ তাঁকে দেখে গাড়ি দাঁড় করান দমদমের সাংসদ সৌগত রায় (Dumdum Tea Seller wins heart of MP Saugata Roy)। প্রবীণ সাংসদ চা অনুরাগী বলেই পরিচিত ৷ বলাইয়ের চা খেয়ে ভূয়শী প্রশংসা করেন সৌগত রায় । বলাই জানান, তিনি সাংসদকে খাইয়েছিলেন স্পেশাল চা । সাংসদ তাঁর চা খেয়ে ভীষণ খুশি হন এবং দু'হাত তুলে আশীর্বাদ করেন তাঁকে । এমনিতে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি বলাই । তবে বলাইয়ের স্বপ্ন তাঁর ছেলে পড়াশোনা করুক । এ ক্ষেত্রে অর্থ যাতে অন্তরায় না হয় তাই উদয়াস্থ পরিশ্রম করছেন বলাই । সাধারণ মানুষের ভালোবাসা পাথেয় এই চা বিক্রেতার । তিনি চান, তার পরিবারও দুধেভাতে থাকুক ।