কলকাতা, 31 ডিসেম্বর : রাত পোহালেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। প্রতিবছর বাংলার বিভিন্ন অংশে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠা দিবস সাড়ম্বরে পালন করেন। কিন্তু এবার কি হবে ? এবারও কি সাড়ম্বরে পালিত হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতিষ্ঠা দিবস ? নাকি জন্মের পর এই প্রথম তৃণমূলের সবচেয়ে ফিকে প্রতিষ্ঠা দিবস দেখবে বঙ্গবাসী ? 2020 সালের শেষদিনে এটাই ছিল রাজনৈতিক মহলের অন্যতম চর্চার বিষয়।
কেন এই আলোচনা ? তা জানতে অবশ্য রকেট সায়েন্স জানার প্রয়োজন পড়ে না। 2011 সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর এবারই প্রথম সবচেয়ে টালমাটাল অবস্থা তৃণমূল কংগ্রেসের। যে দু'টি আন্দোলনকে সামনে রেখে 2007-'08 সালে তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান, তার মধ্যে একটির কাণ্ডারি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আবার 2016 সালের পর জেলায় কংগ্রেস-সিপিএম ভাঙানোতেও তৃণমূলের হয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল শুভেন্দুর।
সেই শুভেন্দুই এখন তৃণমূলে অতীত। তিনি এখন বিজেপি নেতা। তাঁর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। বিভিন্ন জেলায় শুভেন্দুর সঙ্গে থাকার বার্তা ইতিমধ্যেই দিতে শুরু করেছেন তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা। ফলে, এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের কংগ্রেসের অবস্থা টালমাটাল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাই প্রতিষ্ঠা দিবসেও তার প্রভাব পড়বে বলে তাঁদের মত।
আরও পড়ুন:অবিলম্বে পিসি-ভাইপোর গ্রেপ্তারি চাইলেন বিরোধীরা
যদিও স্বাভাবিকভাবেই এই যুক্তি মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, "প্রতিষ্ঠার সময় থেকে নানা গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দল তৈরি হয়েছে। এখন সরকারে রয়েছি। কিন্তু একসময় অনেক ঘাত প্রতিঘাত ছিল। লড়াই করতে করতে এই জায়গায় পৌঁছেছি। স্বাভাবিকভাবে যাঁরা প্রথম দিন থেকে দলটা করেছেন, শহিদ হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে স্মরণ করে আগামীকাল দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করব।"
তিনি শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগকেও গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, "তিনি দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নন। আমি যখন ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ছিলাম তখন আমার সঙ্গে ওঁরা ছাত্র আন্দোলন করেছেন। যুব আন্দোলন করেছেন। উনি কাঁথি পৌরসভার একজন কাউন্সিলর ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় সাংসদ হয়েছিলেন। মন্ত্রী হয়েছিলেন। এটাকে বাদ দিয়ে ওঁর কত ক্ষমতা আছে! নিজে একটা দল করে দেখতে পারতেন। আমাদের চেষ্টা করছেন বিব্রত করার। কিন্তু কোনও লাভ হবে না। অনেক খলিফাকে দেখেছি। কেউ কিছু করতে পারেনি উনিও কিছু করতে পারবেন না।"