কলকাতা, ১২ মার্চ: উত্তরের রকবাজি থেকে কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়া। এক্কা গাড়ি থেকে ডেকার্স লেনের স্ট্রিট ফুড। উত্তর কলকাতার মানুষের জীবন কাহিনি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে এবার শর্ট ফিল্ম তৈরি করতে চলেছে ডিস্ট্রিক্ট ইলেক্টোরাল অফিসারের(DEO) দপ্তর।
হঠাৎ কেন শর্ট ফিল্ম? উত্তর কলকাতা নির্বাচনী জেলার DEO দিব্যেন্দু সরকার জানিয়েছেন পরিকল্পনার কথা। আসলে স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই ছবিগুলো তৈরি করা হবে ভোটার টানতে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, "অন্য অনেক জায়গার থেকে উত্তর কলকাতায় ভোটদানের প্রবণতা অনেকটাই কম। এই রাজ্যের আর পাঁচটা লোকসভা থেকে চরিত্রগতভাবে উত্তর কলকাতা অনেকটাই আলাদা। দেখা গেছে, যেসব এলাকায় মানুষজন বসবাস করেন সেখানে ভোটদানের হার কিছুটা বেশি। আবার যে অংশগুলোতে অফিস-কাছারি রয়েছে সেখানে ভোটদানের হার খুবই কম। আমরা চাইছি বেশি সংখ্যায় মানুষ ভোটের দিন বুথে আসুন। নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুন। ভোটদানের কথা প্রচার করতেই ব্যবহার করা হবে ওই শর্ট ফিল্মগুলি। এই নিয়ে চলছে ভাবনাচিন্তা। আশা করি খুব শীঘ্রই বাস্তবে রূপ দেখতে পাবে এই ভাবনা।"
দিব্যেন্দুবাবু আরও বলেন, "শুধুই ভোটার টানা উদ্দেশ্য নয়। ঐতিহ্যের উত্তর কলকাতার নানা মুডকে ধরতে চাই আমরা। এই বিষয়টি এখন ভাবনার পর্যায়ে আছে। খুব পরিষ্কার গঠন এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি। আমরা একডজন গল্প তৈরি করতে চাইছি। প্রতিটা এক মিনিটের হবে। যেগুলোর মাধ্যমে উত্তর কলকাতার ঐতিহ্য, মুড ফুটিয়ে তোলা হবে। আমরা এই ছবিগুলো নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছাব ভোটের ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়ার জন্য।" ছবিগুলোর বিষয় কী হবে? সেই উত্তরে দিব্যেন্দুবাবু বলেন, এই ছবিগুলোর বিষয় কলকাতার রক হতে পারে। কলেজ স্ট্রিটের বই বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাকে নিয়ে হতে পারে। ঘোড়ার গাড়ি নিয়েও হতে পারে। ডেকার্স লেনের খাবার নিয়েও হতে পারে।" এই ব্যাপারে কি কোনও স্ক্রিপ্ট রাইটার বা পরিচালক নিযুক্ত করা হবে? তাঁর উত্তর, "পুরো বিষয়ের কনসেপ্ট আমাদের। আমরা ভাবছি। স্ক্রিপ্টগুলোর ভাবনাও আমাদের মধ্যে আছে। তবে এগুলো করার জন্য আমাদের শুট করতে হবে। তার জন্য একটা এজেন্সি লাগবে। এছাড়াও স্ক্রিপ্টে নাটকীয়তা দেওয়ার একটি পেশাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। তবে কোন প্রতিষ্ঠান কাজ করবে সেই বিষয়ে আমরা এখনই বলছি না। আমরা তৈরি হচ্ছি পুরো বিষয়টা নিয়ে।"
এমনিতে নির্বাচনের প্রস্তুতির দিক থেকে তৈরি উত্তর কলকাতা নির্বাচনী জেলা। সব ধরনের ট্রেনিং প্রায় শেষ। বিভিন্ন বিধানসভার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা শুরু করে দিয়েছেন কাজ। এখন বাকি শুধুই ভোট কর্মীদের ট্রেনিং। এ বিষয়েও অভিনব ভাবনা রয়েছে DEO অফিসের। এর জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি ওয়েব টিউটরিয়াল। দিব্যেন্দু বলেন, "আমরা প্রিজ়াইডিং অফিসারসহ অন্য ভোট কর্মীদের ট্রেনিংয়ের জন্য তৈরি করেছি একটি ওয়েব টিউটরিয়াল। যেটির মাধ্যমে একেবারে হাতে-কলমে দেখানো হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া। এই ওয়েব টিউটরিয়ালের ব্যবহার ভোট কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে তা করার চেষ্টা করছি। এই টিউটরিয়াল ভোট কর্মীরা ছাড়াও যে কেউ ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য জেলার ভোট কর্মীরাও এর মাধ্যমে পেয়ে যাবেন অনেক কিছু। আবার সাধারণ মানুষ জানার আগ্রহ থাকলে এই ওয়েব টিউটরিয়াল থেকে জানতে পারবেন ভোট কর্মীদের দায়িত্ব সংক্রান্ত বিষয়। আমরা এটিকে মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছি। আশা করি আমাদের চেষ্টা সফল হবে। ভবিষ্যতে এটিকে মডেল হিসেবে মেনে নেবে গোটা রাজ্য কিংবা দেশ।"
শুনুন দিব্যেন্দু সরকারের বক্তব্য