কলকাতা, 2 জুলাই: সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঘটনারই প্রায় পুনরাবৃত্তি হল উত্তর কলকাতার গৌরিবাড়িতে । রিপোর্ট না পাওয়ায় রাতভর মিষ্টির দোকানেই পড়ে রইল কোরোনা আক্রান্ত মালিকের মৃতদেহ । রিপোর্ট আসার পর স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে মৃতদেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
গৌরিবাড়ির ওই মিষ্টির দোকানের মালিকের বাড়ি সিঙ্গুরে । তিনি প্রতিদিন বাড়ি ফিরতেন না ৷ কর্মচারীদের সঙ্গেই দোকানে থাকতেন । কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি । শরীরে কোরোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় 29 জুন একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে নমুনা পরীক্ষা করেন । গতকাল বিকেলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় । কিন্তু নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়ায় চিকিৎসকরা ডেথ সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করেন ।
হাসপাতাল থেকে দেহ ফিরিয়ে আনা হয় । স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট লেখাতে গেলে তিনিও রিপোর্ট পাওয়ার আগে সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করেন । নিরুপায় হয়ে কর্মীরা মৃতদেহ দোকানে রেখে নিজেরা বাইরে শুয়ে পড়েন । দোকানের ভিতরেই 16 ঘণ্টা পড়ে থাকে মৃতদেহ । আজ সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
ওই ব্যক্তি বেসরকারি ল্যাবে সিঙ্গুরের বাড়ির ঠিকানা দেওয়ায় আজ সকালে সেখানেই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পৌঁছায় । রিপোর্টে জানা যায়, তিনি কোরোনা আক্রান্ত ছিলেন । এরপরই স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা এসে মৃতদেহ নিয়ে যান।
কোরোনা আক্রান্তের মৃতদেহ সারারাত এভাবে পড়ে থাকায় স্বাস্থ্য দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও ব্যক্তির যদি কোরোনা উপসর্গ থাকে তবে যাবতীয় নির্দেশিকা মেনে মৃতদেহ সৎকার করতে হবে । নমুনার রিপোর্ট হাতে না পেলে চিকিৎসকরা কীভাবে ডেথ সার্টিফিকেট দেবেন ? সাধারণ ডেথ সার্টিফিকেট দিলে মৃতদেহটিকে প্রথাগতভাবে সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।