কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর :রবিবার (26 সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতেই স্থলভাগে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় গুলাব (Cyclone Gulab) ৷ এমনটাই জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এদিন দুপুর নাগাদ গুলাবের অবস্থান ছিল ওড়িশার গোপালপুর থেকে 180 কিলোমিটার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনম থেকে 225 কিলোমিটার দূরে ৷ হিসাবে বলছে, রবিবার মধ্যরাতেই এই দু’টি জায়গার মাঝামাঝি উপকূলীয় এলাকা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড় গুলাব ৷ সেই সময় ওই এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় 75 থেকে 80 কিলোমিটার ৷ তবে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ 90 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে ৷
আরও পড়ুন :Digha alert : চোখ রাঙাচ্ছে গুলাব, দিঘাতে পর্যটকদের হোটেল ছাড়ার নির্দেশ
পশ্চিমবঙ্গের জন্য স্বস্তির বিষয় হল, গুলাবের তেমন প্রভাব এ রাজ্যে পড়বে না ৷ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি হলেও তা ভয়াবহ আকার নেবে না বলেই অনুমান আবহবিদদের ৷ তবে গুলাব স্থলভাগে ঢোকার পর গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের উপকূলের জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে ৷ যার সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে 60 কিলোমিটার ৷ তবে সাধারণভাবে হাওয়ার গতি থাকবে ঘণ্টায় 40 থেকে 50 কিলোমিটারের মধ্যে ৷
গুলাবের প্রভাবে বেশি বৃষ্টিপাত হবে দক্ষিণ 24 পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৷ দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও আকাশ মেঘলা থাকবে ৷ আগামী 24 ঘণ্টায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে ৷ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে 28 ও 29 সেপ্টেম্বর ৷ সবথেকে বেশি বৃষ্টি হবে 28 সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) ৷ কারণ, ওই দিনই আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে ৷ এই ঘূর্ণাবর্তের জেরে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হবে ৷ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলির সবক’টিতেই ৷
আগামী মঙ্গলবার উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ৷ পরদিন, অর্থাৎ 29 সেপ্টেম্বর (বুধবার) পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে ৷ ঘূর্ণাবর্তের জেরে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় 50 থেকে 60 কিলোমিটার ৷ এছাড়া, দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ৷
ঘূর্ণিঝড় নয়, এ রাজ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত ৷ আরও পড়ুন :Gulab: গুলাব মোকাবিলায় তৎপর প্রশাসন, তবু আতঙ্কিত সুন্দরবনবাসী
এই ঘূর্ণাবর্তের জেরে বেশ কিছু সর্তকতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর ৷ দুর্যোগের দিনগুলিতে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে মানা করা হয়েছে ৷ টানা বৃষ্টিতে মাটির ঘর এবং বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে ৷ কলকাতা-সহ জেলাগুলিতে ফের জল জমতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে ৷ সেক্ষেত্রে জমা জলে যানজট এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে ৷ তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহবিদরা ৷ একইসঙ্গে জল জমে ক্ষেতের ফসলও নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷