কলকাতা, 30 জুলাই : 501 দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর শুক্রবার চাকরি প্রার্থীদের একাংশের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC MP Abhishek Banerjee) । আর এই নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (CPIM Bengal Secretary Md Salim) । তিনি শিক্ষা দফতরের দুর্নীতির সমাধানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ।
সেলিমের কথায়, "কেন শিক্ষক পদপ্রার্থীদের একটি অংশের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে বৈঠক করলেন ? সেটা তো তৃণমূলের (Trinamool Congress) অফিস নয় । নয় সরকারি অফিস । শিক্ষক পদপ্রার্থীদের আজকে শিক্ষা দফতর ডাকেনি, নবান্নেও ডাকা হয়নি । ডেকেছিলেন তৃণমূলের নেতা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । কোথায় ডাকা হয়েছিল ? সরকারি দফতরে নয়, ক্যামাক স্ট্রিটে প্রাইভেট কোম্পানির অফিসে । শিক্ষা দফতর নয়, তৃণমূলের কোম্পানির অফিসে এই আলোচনায় প্রমাণিত হল, নিয়োগ দুর্নীতি শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নয়, এই দুর্নীতিটা তৃণমূলের ।"
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আরও বলেছেন, ‘‘মেধা তালিকায় নাম থাকা যাঁদের চাকরি প্রাপ্য, তাঁরা 500 দিন ধরে চিৎকার করে ন্যায্য দাবি জানানো সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী, সরকার, তৃণমূল কেউ তাদের কথা শোনেননি । বরং পুলিশ দিয়ে হামলা করেছে । পিটিয়ে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে । এখন তাঁদের একাংশকে ডেকে মিটিং হচ্ছে !’’
Salim Slams Abhishek: চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে অভিষেক বোঝালেন দুর্নীতি তৃণমূলেরই, কটাক্ষ সেলিমের তিনি আরও বলেন, ‘‘এভাবে একাংশকে ডেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও (Partha Chatterjee) মিটিং করেছিলেন, কাউকে কাউকে কিনে নিয়ে দুর্নীতিচক্রের শরিক করেছিলেন । আমরা আশা করব এবার যাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন, তাঁদের গায়ে যেন কয়লার ময়লা না লাগে । অনেক হয়েছে, আর নয়, স্বচ্ছভাবে মেধা তালিকা ভুক্তদের নিয়োগ দেওয়া হোক । তার বদলে আন্দোলনকারীদের মনোবল ভাঙা বা ঐক্য ভাঙার চেষ্টা করলে ভালো হবে না । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে এই চেষ্টা করেছিলেন, তাতে কোনও সুরাহা হয়নি ।’’
এখানেই শেষ নয়, সেলিমের আরও অভিযোগ, "যেভাবে দুর্নীতির টাকা বেরিয়ে আসছে, তাতে বিশ্বের সামনে রাজ্যের সম্মান ভুলুণ্ঠিত । এটা একজন ব্যক্তি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিষয় হতে পারে না ৷ এই লুটের কাজে রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছে, পুলিশ, শিক্ষা দফতরের অফিসারদের ব্যবহার করা হয়েছে । সরকারের মূল্যবোধ কিছু নেই, মুখ্যমন্ত্রী শুধুই মূল্য চিনেছেন । কিন্তু আমাদের দাবি প্রথমত, শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির (Bengal Recruitment Scam) পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক । মমতা-মোদীর বৈঠকের বোঝাপড়ার কারণে তদন্ত যাতে ধামাচাপা না পড়ে তার জন্য আদালতের নজরদারি চাই ।"
অন্যদিকে অপর্ণা সেনের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে সেলিম বলেন, "আমরা বারবার বলছি, সমস্ত অংশের মানুষজনকে এগিয়ে আসতে হবে । বিশ্ব জুড়ে যে কোন ঘটনার আগাম আভাস পান এই বুদ্ধিজীবীরা । কিন্তু, আমরা কী দেখলাম যাঁরা মঞ্চ আলো করে পুরস্কার নিচ্ছেন, তাঁরা এই ঘটনায় এগিয়ে এলেন না । তাই বুদ্ধিজীবীদের এই 'জীবী'টাকে সরিয়ে যাঁরা এগিয়ে আসবে, তাঁদেরকে স্বাগত জানাই ।"
আরও পড়ুন :Abhishek Banerjee Meeting: অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক সফল, দাবি আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের