চিকিৎসার খরচ ডিসপ্লে করতে হবে হাসপাতালে
যে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে শুধু বেড ভাড়া নয়, সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহ হাসপাতালের সব ধরনের খরচ ডিসপ্লে করতে হবে ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (WBCERC) এই নির্দেশ আগেই জারি করেছিল ৷ কিন্তু সেই নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়নি ছয়টি হাসপাতাল৷ এজন্য এই সব বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। আগামী 25 সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি হবে ৷
কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর: শুধুমাত্র বেড চার্জ নয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ার যে চার্জ রয়েছে, সে সব ডিসপ্লে করতে হবে হাসপাতালে। গত 22 অগাস্ট এমনই এক অ্যাডভাইসরি ইশু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন অর্থাৎ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (WBCERC)। অথচ, এই কমিশন জানতে পারে, ইশু করা এই অ্যাডভাইসরি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়নি ছয়টি বেসরকারি হাসপাতাল। যার জেরে, ওই ছয়টি হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। আগামী 25 সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি হবে। ওই দিনের মধ্যে এই ছয়টি হাসপাতালকে হলফনামা পেশ করতে বলেছে কমিশন।
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য লাগামহীন খরচের অভিযোগ উঠছে। এই ধরনের অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। তবে, COVID-19-এর এই পরিস্থিতির মধ্যেও যেভাবে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য লাগামহীন খরচের অভিযোগ উঠছে, তাতে রাশ টানতে।উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। এর জন্য ইতিমধ্যেই 15টি COVID অ্যাডভাইসরি ইশু করেছে এই কমিশন। গত 22 অগাস্ট কমিশনের ইশু করা 15 নম্বর COVID অ্যাডভাইসরির বিষয়ে কমিশন জানিয়েছে, "কমিশন আগেও বলেছে, আইনেও রয়েছে, কমিশন আবারও বলছে, প্রতিটি হাসপাতালে যে রেট চার্জ রয়েছে, শুধুমাত্র বেড ভাড়া নয়, প্রতিটি ইনভেস্টিগেশন, অন্যান্য প্রসিডিওরের যে চার্জ, সেটা ডিসপ্লে করতে হবে। হাসপাতালে অন্য বিভিন্ন স্থানে ডিসপ্লে করা যেতে পারে। তবে রিসেপশন ডেস্ক, হাসপাতালে প্রবেশের মুখ এবং ক্যাশ কাউন্টার, এই তিনটি স্থানে ডিসপ্লে করতেই হবে।" এমনভাবে এই ডিসপ্লে করতে হবে যাতে অন্তত 6 ফুট দূর থেকে একজন মানুষ খালি চোখে সেটা পড়তে পারেন। গত 22 অগাস্ট একটি রিকোয়েস্ট-ও ইশু করেছে কমিশন। এই রিকোয়েস্ট ইশু করার বিষয়ে কমিশন জানিয়েছে, মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তাঁরা জানেন না কমিশন কোথায়, কমিশনে অভিযোগ কোথায় জানানো যাবে। এর জন্য প্রত্যেকটি হাসপাতালকে অনুরোধ করা হয়েছে, হাসপাতালের সামনে একটু স্থান কমিশনকে দেওয়া হোক যাতে কমিশন সেখানে হোর্ডিং দিতে পারে। ওই হোর্ডিংয়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে ঠিকানা, ফোন নম্বর, ই-মেইল ID থাকবে যাতে মানুষের সমস্যা হলে, মানুষ কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। হোর্ডিং লাগানোর জন্য হাসপাতালগুলিকে সাহায্যের অনুরোধ করা হয়েছে।
এ দিকে, কমিশন জানতে পারে, ওই 15 নম্বর অ্যাডভাইসরি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়নি কলকাতার ছয়টি বেসরকারি হাসপাতাল। যার জেরে, ওই ছয়টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে কমিশন। এ দিকে, জানা গিয়েছে, কমিশনের এই মামলা দায়েরের পর ওই বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে কোনও কোনও হাসপাতালের তরফে কমিশনের চেয়ারপার্সন জাস্টিস (অবসরপ্রাপ্ত) অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়কে হোয়াটসঅ্যাপ করে জানানো হয়েছে যে, ওই হাসপাতালে ডিসপ্লে করা হয়েছে। এই বিষয়ে কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "কেউ কেউ জানিয়েছে। তবে, এভাবে বোঝা যায় না। আগামী 25 সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি হবে। আগামী 25 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় রয়েছে, ওই দিনের মধ্যে হলফনামা পেশ করতে বলা হয়েছে।" কমিশনের ইশু করা 15 নম্বর COVID অ্যাডভাইসরি অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, কমিশন তা খতিয়ে দেখবে বলে জানানো হয়েছে।