পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

স্কুলে ভরতির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ, প্রকাশ্যে প্রধান শিক্ষিকা-কমিটির দ্বন্দ্ব

সরকারি নির্দেশিকা মেনে লটারির মাধ্যমে প্রাথমিক বিভাগে ভরতি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বারাসতের বিভিন্ন হাইস্কুলে । আজ সেই ভরতি প্রক্রিয়া ছিল বারাসতের মহাত্মা গান্ধি হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগে । লটারি শুরু হওয়ার ঠিক আগে সকালে অভিভাবকরা স্কুলে এসে লক্ষ্য করেন, ভরতি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পোস্টার সাঁটানো রয়েছে স্কুলের দেওয়ালে । সেখানে খোদ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপিকা বালা বিশ্বাসের নাম রয়েছে । কোনও পোস্টারে প্রধান শিক্ষিকার "কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও" লেখা রয়েছে । আবার কোনও পোস্টারে "প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভরতির সমস্ত আসন প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে করতে হবে,"-একথা লেখা রয়েছে । পোস্টারের একেবারে নিচে লেখা অভিভাবক মঞ্চ ।

By

Published : Dec 30, 2019, 11:00 PM IST

Barasat Mahatma Gandhi Memorial School
বারাসত মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল স্কুল

বারাসত, 30 ডিসেম্বর : প্রাথমিক বিভাগে ভরতি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধেই পোস্টার পড়ল স্কুলে । যার জেরে স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষিকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল । বারাসতের একটি সরকারি স্কুলের ঘটনা । যদিও প্রধান শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর । পরিচালন কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলরের দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি ।

সরকারি নির্দেশিকা মেনে লটারির মাধ্যমে প্রাথমিক বিভাগে ভরতি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বারাসতের বিভিন্ন হাইস্কুলে । আজ সেই ভরতি প্রক্রিয়া ছিল বারাসতের মহাত্মা গান্ধি হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগে । লটারি শুরু হওয়ার ঠিক আগে সকালে অভিভাবকরা স্কুলে এসে লক্ষ্য করেন, ভরতি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পোস্টার সাঁটানো রয়েছে স্কুলের দেওয়ালে । সেখানে খোদ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপিকা বালা বিশ্বাসের নাম রয়েছে । কোনও পোস্টারে প্রধান শিক্ষিকার "কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও" লেখা রয়েছে । আবার কোনও পোস্টারে "প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভরতির সমস্ত আসন প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে করতে হবে,"-একথা লেখা রয়েছে । পোস্টারের একেবারে নিচে লেখা অভিভাবক মঞ্চ । স্কুলের দেওয়ালে পোস্টারে ছয়লাপ দেখে স্বাভাবিকভাবে ক্ষোভ ছড়ায় অভিভাবকদের মধ্যে । এনিয়ে সাময়িক উত্তেজনাও ছড়ায় স্কুল চত্বরে । পরে, জেলা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় । এরপরই শুরু হয় লটারির মাধ্যমে ভরতি প্রক্রিয়া । যদিও তারপরও ভরতি প্রক্রিয়ায় প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর দীপক দাশগুপ্ত । তিনি জানান, "এই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে মোট আসন সংখ্যা 120। গতবছর উদ্যোগ নিয়ে লটারির মাধ্যমে 100 জনকে ভরতি করা হয়েছিল । অথচ এবার লটারির মাধ্যমে 60 জন ও ফরম ফিলাপ করে 20 জনকে ভরতি করা হয়েছে । আমি যখন প্রধান শিক্ষিকার কাছে ভরতির সঠিক সংখ্যা চায়, তখন তিনি আমাকে তা দেখাতে পারেননি । এর থেকেই বোঝা যায় ভরতি প্রক্রিয়া নিয়ে এখানে কি চলছে৷" দীপকবাবুর অভিযোগ, এখানে লটারি কম হয় । ভরতির নামে কেনাবেচা চলে । 80 জন ভরতি হওয়ার পরও যে 40 টি আসন রয়েছে, তাতে পয়সার বিনিময়ে ভরতি করা হবে ৷ এবিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ করা হলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি ৷

দুর্নীতির পোস্টার

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীপিকা বালা বিশ্বাস বলেন, "উনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন । নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই ধরনের অভিযোগ করছেন ৷ 2017 সাল থেকে জেলা প্রশাসনের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, এই স্কুলের নিকটবর্তী যে সমস্ত প্রাইমারি স্কুল রয়েছে, সেই সমস্ত স্কুলের পড়ুয়াদের ভরতির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে । সেই নির্দেশিকা মেনেই আমরা লটারির মাধ্যমে ভরতি করছি । আর সেটা সকলের সামনেই নিয়ম মেনে করা হচ্ছে । জেলা প্রশাসনও বিষয়টি জানে ।"

দুর্নীতির পোস্টার

স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, "উনি গত বছরও গায়ের জোরে নিজের মতো করে ভরতি করানোর চেষ্টা করেছিলেন । কিন্তু তা করতে না পারায় এবারও তিনি চেষ্টা করেন নিজের মতো করে ভরতি করবেন । সেই কাজ সম্ভব হবে না বুঝতে পেরেই উনি দুর্নীতির মিথ্যা গল্প তৈরি করছেন । ওঁর কাজ স্কুলের উন্নয়নে সহযোগিতা করা । ভরতি প্রক্রিয়ায় মাথা গলানো নয় ।" তাঁর আরও অভিযোগ, "সভাপতির অসহযোগিতার জন্যই স্কুলের উন্নয়ন থমকে রয়েছে । পড়ুয়ারা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ।"

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর চম্পক দাস । তিনি বলেন, "গতবছর মস্তানি করে স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভরতি করিয়েছিলেন । এবারও উনি অভিভাবকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন । কিন্তু, আমরা অভিভাবকদের বুঝিয়ে বলায় তাদের অসুবিধে হয়নি বুঝতে ।"

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details