কলকাতা, 1জুলাই: জুন মাসের শুরু থেকেই ফিমকুবের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা। বিক্ষোভ যেমনট্রাস্ট পরিচালিত বেসরকারি স্কুলে হচ্ছে,তেমনি চার্চ পরিচালিত বেসরকারিস্কুলগুলিতেও হচ্ছে। এখনও অব্যাহত অভিভাবকদের বিক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে ফি নিয়েকিছুটা নরম হল চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়া (CNI)।এদিনCNIপরিচালিত স্কুলগুলির সঙ্গে বিশপ হাউজেবৈঠক করেন কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিং। বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়,কম্পিউটার,স্পোর্টস অ্যান্ড গেমস এবং লাইব্রেরিখাতের ফি6মাসেরজন্য25শতাংশমকুব করা হবে।
কম্পিউটার, স্পোর্টস ও লাইব্রেরি খাতে 25 শতাংশ ফি মকুবের সিদ্ধান্ত CNI-এর - কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিং
অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে কিছুটা সুর নরম করল চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়া (CNI)। এই সংস্থা পরিচালিত স্কুলগুলির সঙ্গে বিশপ হাউজে বৈঠকের পর কম্পিউটার, স্পোর্টস অ্যান্ড গেমস এবং লাইব্রেরি খাতের ফি 6 মাসের জন্য 25 শতাংশ মকুব করার কথা ঘোষণা করে ৷
বেসরকারি স্কুলে বিক্ষোভকারী অভিভাবকদেরদাবি,তাঁরা কোরোনা ভাইরাসের জেরে চলা দীর্ঘ লকডাউন ও তারপরবর্তী সময়ে আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। তাই এই সময় শুধুমাত্র টিউশন ফিদেবেন তারা । যেসব স্কুলে টিউশন ফি সহ অন্যান্য বিভিন্ন খাতে ফি নেওয়া হয় সেই সববেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র টিউশন ফি দেওয়ার ও যে সব স্কুলে টিউশন ফি বাবদপুরো টাকাটা নেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে50শতাংশ ফি মকুবের দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু,টিউশন ফি বা অন্যান্য ফি কমালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরবেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। তার ফলে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে। অভিভাবকদের দাবির মুখেগত15জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েএকথা জানান কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিং। দুই পাতার চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতাবন্দ্যোপাধ্যায়কে কোন কোন কারণে চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়ার অধীনস্থ বেসরকারিস্কুলগুলিতে টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি মুকুব করা সম্ভব নয় তা বিস্তারিতভাবেজানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আবেদন জানান বিশপ।
চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়া,ডায়োসিস অফ কলকাতার অধীনে10টি আন-এডেড ইংরেজি মাধ্যম ও3টিDAগেটিং স্কুল মিলিয়ে মোট13টি স্কুল রয়েছে। সেগুলি হল,কলকাতার লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েস,লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস,প্র্যাট মেমোরিয়াল স্কুল,খিদিরপুরের সেন্ট থমাস স্কুল,খিদিরপুরের সেন্ট থমাস গার্লস স্কুল,হাওড়ার সেন্ট থমাস চার্চ স্কুল,ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের সেন্ট থমাস স্কুল,সেন্ট পলস মিশন স্কুল,সেন্ট জেমস স্কুল,ইউনিয়ন চ্যাপেল স্কুল,সেন্ট জনস ডায়োসিসান গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল,ক্রাইস্ট চার্চ গার্লস হাইস্কুল এবং স্কটিশ চার্চকলেজিয়েট স্কুল। এর মধ্যে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলে ফি মকুবের দাবিতেবিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ফি মকুব কেন করাসম্ভব নয় তা জানান কলকাতার বিশপ।
কিন্তু,তারপরেও বিভিন্ন স্কুলে অব্যাহত থাকে অভিভাবকদেরবিক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে আজ অধীনস্থ সব স্কুলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন স্কুলগুলিরপ্রেসিডেন্ট,চেয়ারম্যান তথা কলকাতার বিশপ পরিতোষ ক্যানিং। সেই বৈঠকেই অভিভাবকদের একটুরেহাই দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,তিনটি খাতের ফি6মাসের জন্য25শতাংশ করে মকুব করা হবে। এবিষয়ে বৈঠক শেষে বিশপপরিতোষ ক্যানিং বলেন, "আজকে অনেক আলোচনার পর,অনেক অ্যাকাউন্টস দেখার পর,আমরা চিন্তা ভাবনা করলাম তিনটে হেডিংয়ে,কম্পিউটারের জন্য,স্পোর্টস এবং গেমসের জন্য যে ফি নেওয়া হয়,লাইব্রেরির জন্য যে ফি নেওয়া হয়,এই তিনটে হেডিংয়ে25শতাংশ করে আমরা মকুব করব এবং সেটা এপ্রিল থেকেসেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত।"
তবে,আজ কলকাতার বিশপ স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন,স্কুলে স্কুলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ কাম্য নয়। এটাসমষ্টিগত সমস্যা নয়। কাজ চলে গিয়েছে বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেটা ব্যক্তিগতসমস্যা। যাদের এই সমস্যা হচ্ছে তাঁরা জানালে তাঁদের বিষয়টা সহানুভূতির সঙ্গে দেখাহবে। কিন্তু,সমষ্টিগতভাবে স্কুলের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখানো ঠিক নয়। তাতে ছাত্র-ছাত্রীদেরউপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। কারণ ওই স্কুলেই ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করে।তাঁদেরকে পড়াশোনা করতে হবে,বড় হতে হবে। সেখানেই বারবার করে অভিভাবকরা এসেবিক্ষোভ দেখানোটা ভালো দেখায় না। এই বিষয়ে অভিভাবকদের ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শদেন বিশপ। পরিতোষ ক্যানিং জানাচ্ছেন,যদি পুরো ফি মকুব করে দেওয়া হয় তাহলে ষষ্ঠ পে কমিশনঅনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না।