কলকাতা, ১০ মার্চ: রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলোতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। তবে পরীক্ষায় টোকাটুকি বন্ধ করতে সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে প্রশাসন ও মাধ্যমিক বোর্ড। যেহেতু পরীক্ষা হলের ভেতরে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ নিষেধ সেই কারণে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন :2017 Malda Flood Corruption : কোর্টের নির্দেশে ফেরার বরুই পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে তালা লাগাল পুলিশ
জানা গিয়েছে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে কেন জানতে চেয়ে রাজ্যের হলফনামা তলব করেছিল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে এডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে মালদা, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের বেশ কিছু জায়গা থেকে মাধ্যমিকের প্রশ্ন ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এর আগে। ২০১৭ সালের সময় থেকে এই চক্রটা সক্রিয় হয়েছে। পরীক্ষার সময় শুধুমাত্র ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে। কিন্তু ফোন কল করতে পারে লোকজন। আগের পরীক্ষাগুলোতে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেটা আটকানোর জন্যই এটা করা হয়েছে। এসএমএস, ভয়েস কল, ফোনকল সবই চলছে। বিসনেস বন্ধ করা হয়নি।"
এরপর প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, "কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের নিশ্চই ফোন নিয়ে ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না?" এর উত্তরে এডভোকেট জেনারেল বলেন, "অবশ্যই। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা যখন টয়লেট ব্রেকে যায় সেখানে শৌচাগার থেকে প্রশ্নপত্রের হার্ড কপি নিয়ে চলে আসছে। এটাতে একটা চক্র সক্রিয় থাকে। পর্যাপ্ত ইনভিজিলেশন না থাকাও একটা সমস্যা। আটকানো যাচ্ছে না। আমরা গোটা রাজ্যে এটা করিনি। নির্দিষ্ট জায়গার তথ্য সংগ্রহ করে তারপর করা হয়েছে এটা।"
আরও পড়ুন : Visva Bharati Protest : বিশ্বভারতীতে পড়ুয়াদের আন্দোলন গণতান্ত্রিক অধিকার, তা যেন শান্তিপূর্ণ হয়, জানাল কলকাতা হাইকোর্ট
এর পালটা মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, "এখানে যে ঘটনাগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে তা দিন চার বছর আগের ঘটনা। এগুলো কি ধরনের ইনটেলিজেন্স রিপোর্ট? এখানে কোনও ইনটেলিজেন্স রিপোর্ট নেই। তাহলে উল্লেখ করার দরকার ছিল রাজ্য গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে এটা করেছ? নিয়ম হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা যাতে মোবাইল ফোন নিয়ে ভেতরে না ঢোকে। কিন্তু তা না করে সমস্ত মানুষকে কেন এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? চিটিং বন্ধ করতে গোটা এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা ৫-৬ ঘণ্টার জন্যে বন্ধ রাখা হবে? কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টারনেট সাসপেনশনের আইন করেছিল পাবলিক সেফটির কথা ভেবে। কিন্তু এখানে পাবলিক সেফটির কোনও ইস্যুই নেই।" এদিন উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আপাতত রাজ্যের ওই বিজ্ঞপ্তির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।