কলকাতা, 10 জুন:বাংলাদেশে (Bangladesh) পাচার হয়ে যাওয়া 17 বছরের এক নাবালিকাকে দেশে ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগী হল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ অবিলম্বে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি শম্পা সরকার (Justice Shampa Sarkar) ৷ বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের ঢাকায় (Dhaka) অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস (High Commission of India) ছাড়াও সেদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে (Ministry of Home Affairs) দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি ৷
বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজু করেছেন নদিয়ার তাহেরপুরের এক বাসিন্দা ৷ তাঁর দাবি, গত বছরের 12 নভেম্বর সকালে তাঁর কিশোরী মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় ৷ ওই ব্যক্তির আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত জানিয়েছেন, গত 12 নভম্বের তাঁর মক্কেলের 17 বছরের মেয়ে নিজেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ৷ কিন্তু, তারপর সে আর বাড়ি ফেরেনি ! পরে এ নিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে মেয়েটির পরিবার ৷ তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই কিশোরীকে বাংলাদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে ৷ ঘটনায় কিশোর দাস নামে এক যুবকেরও নাম জড়িয়েছে ৷ মামলাকারীর দাবি, কিশোরই ওই মেয়েটিকে বাংলাদেশ পাচার করে দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন:Red Sandal Smuggling : লাল চন্দন কাঠ পাচার করতে গিয়ে পুলিশের জালে বাস্তবের 'পুষ্পা'
পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে, কিশোর দাসের মাধ্যমেই ওমর আহমেদ নামে এক বাংলাদেশি যুবকের সঙ্গে মোবাইলে আলাপ হয় ওই কিশোরীর ৷ পরে জানা যায়, তাহেরপুরের ওই কিশোরী বর্তমানে ওমরের সঙ্গে রয়েছে ৷ ফোনে পরিবারের সদস্যদের সে নাকি জানিয়েছে, ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছনোর কথা তার কিছুই মনে নেই ! কারণ, সেই সময় সে ঘুমিয়ে পড়েছিল ৷ ঘুম ভাঙতেই সে দেখে অন্য একটি দেশে, অচেনা মানুষদের বাড়িতে রয়েছে ৷ কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে অজ্ঞান করে বাংলাদেশে পাচার করে দিয়েছে কিশোর আর তাঁর সহযোগীরা ৷ মনে করা হচ্ছে, ঘটনার দিন ওই কিশোরীকে ঘুমের ওষুধ বা ওই জাতীয় কিছু খাইয়ে বাংলাদেশের বাসে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ বর্তমানে সে বাংলাদেশের কুমারখালি গ্রামে রয়েছে। কিন্তু, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া তাকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরানো সম্ভব নয় ৷
এই মামলা প্রসঙ্গে আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, "17 বছরের একটি মেয়ে বাংলাদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে ৷ মেয়েটিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পাচার করা হয়েছে। ঘুম ভাঙতেই সে দেখে, সে অন্য দেশে চলে গিয়েছে ! বিচারপতি শম্পা সরকার নির্দেশ দিয়েছেন, বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফ থেকে মেয়েটির সঙ্গে গিয়ে দেখা করা হবে ৷ প্রয়োজনে মেয়েটির ছবি তোলা হবে ৷ সম্ভব হলে টেলিফোনে মেয়েটির বাবা-মায়ের সঙ্গে তাকে কথাও বলাবে ৷ একইসঙ্গে, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও বিচারপতি অনুরোধ করেছেন, তারা যেন মেয়েটিকে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফেরানোর বিষয়ে পদক্ষেপ করে ৷"