কলকাতা, 10 জানুয়ারি : সহ-শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরানোর বিষয়ে বিবেচনা করতে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (calcutta high court suggests WB government to remove ssc chairman from his post)। একইসঙ্গে নিয়োগে ত্রুটি এবং তাঁর অযোগ্যতার কারণে এসএসসি চেয়ারম্যানকে কুড়ি হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । জরিমানার টাকা দিতে হবে চেয়ারম্যানকে নিজের পকেট থেকে ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, 2016 সালে নবম-দশম শ্রেণিতে সহ-শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সুমনা নায়েক নামে এক পরীক্ষার্থী ৷ তাঁর দাবি, ওই পরীক্ষার ফলাফলে ওয়েটিং লিস্টে 149 নম্বরে নাম ছিল তাঁর ৷ কিন্তু তাঁকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকেনি কমিশন ৷ অথচ লিস্টে তাঁর পরে নাম থাকে 159, 181, 196 এবং 198 নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ পত্র দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন । কিন্তু তাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি । এরপরেই এই শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন সুমনা ৷
আরও পড়ুন : চার পৌরনিগমের ভোট নিয়ে হাইকোর্টে হলফনামা জমা কমিশনের
হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে এই বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন । স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান ওই ছাত্রীকে নির্দিষ্ট দিনে কাউন্সেলিং এর জন্য মোবাইলে এসএমএস করে ডাকা হয়েছিল কিন্তু ওই প্রার্থী হাজির হননি । ফলে তার পেছনে থাকা প্রার্থীরা কাউন্সেলিংয়ে যোগ দেন এবং যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন ৷ কমিশনের চেয়ারম্যানের এই উত্তরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে আদালত ৷ কেন তাঁকে স্পিড পোস্ট কাউন্সেলিং এর বিষয় না জানিয়ে মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানো হল ? একজন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান জানেন না কীভাবে একজন প্রার্থীকে কাউন্সেলিং এর বিষয়ে ওয়াকিবহাল করাতে হয়? এই প্রশ্নও এদিন তোলেন বিচারপতি ৷ পাশাপাশি, মোবাইলে এসএমএস করেই যে ওই পরীক্ষার্থীকে কাউন্সেলিংয়ের কথা জানানো হবে এই সিদ্ধান্ত কে নিলেন, তাও জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷
এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এসএসসির চেয়ারম্যানের মতো একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে যেভাবে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে গা ছাড়া মনোভাব স্পষ্ট । তা হাইকোর্টকে শুধু অপমান করা নয়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের মতে একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয় । সেই কারণেই রাজ্যের উচিত অবিলম্বে এই গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ওই ব্যক্তিকে সরানো হবে কি না তা বিবেচনা করা ৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নতুন করে ওই আবেদনকারীর জন্য কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত এবং কাউন্সেলিং করার 45 দিনের মধ্যে তাঁকে তাঁর কাছাকাছি কোন স্কুলে চাকরিতে নিযুক্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি ।