কলকাতা, 5 মে : কোরোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । বন্ধ ট্রেন পরিষেবা । রাজ্য পরিবহন দপ্তরের আবেদনে, লকডাউনের প্রথম দফা থেকেই জরুরি পরিষেবা দিচ্ছে একাধিক বেসরকারি বাস ও ট্যাক্সি । তবে চালকদের পাওনা টাকা ও জ্বালানি যথেষ্ট তো নয়ই, যেটুকু মিলছে, তাও বহু দেরিতে । এমনই অভিযোগ বাস মালিকদের।
জরুরি পরিষেবা দিলেও মিলছে না খোরাকি, অভিযোগ বাস মালিকদের
চালকদের পাওনা টাকা ও জ্বালানি যথেষ্ট তো নয়ই, যেটুকু মিলছে, তাও বহু দেরিতে । এমনই অভিযোগ বাস মালিকদের।
শহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাস রেখে দেওয়া হচ্ছে । এছাড়াও বেশকিছু বাস রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের জরুরি পরিষেবার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি টিটু সাহা বলেন যে, "বাস চালকরা ভোর 6 টা থেকে রাত 9 টা পর্যন্ত বাস চালান । অনেক সময় তার বেশি সময়ও বাস চালাতে হচ্ছে । এর বিনিময়ে তাঁদের প্রতিদিন 170 থেকে 190 দেওয়া হচ্ছে । সাধারণত একটা গাড়ি চালিয়ে সারাদিনে আয় হয় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা । একজন চালক কমিশন হিসেবে সেই টাকার 15 শতাংশ পায়। সেই ক্ষেত্রে চালকরা প্রতিদিন 700 থেকে 900 টাকা উপার্জন করেন । কিন্তু এখন তাঁরা সেই একই শ্রম দিয়ে পাচ্ছে মাত্র 190 টাকা । সরকারের তরফে জ্বালানি হিসেবে যে অর্থ দেওয়া হচ্ছে, তাও যথেষ্ট নয়।"
তিনি আরও বলেন যে, সাধারণত একটি বাস 100 থেকে 150 কিলোমিটার চলে প্রতিদিন। কিন্তু এখন বাসগুলি গড়ে চলছে প্রায় 230 কিমি । বাটানগর, শ্রীরামপুর, গড়িয়া স্টেশন, ঠাকুরপুকুর, বেহালাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করছে বাসগুলি ।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায় বলেন যে, "আমার মতে প্রথম যখন জরুরি পরিষেবার জন্য গাড়িগুলি নেওয়া হয় তখন বাসগুলির কত ভাড়া হবে বা কত কিমি চলবে বা চালকদের ক্ষেত্রে স্বাথ্য বীমা দেওয়া হবে কি না, এইসব বিষয়ে পরিকল্পনা বা পরিকাঠামোর অভাব ছিল । তাই যে ক'টি মুষ্টিমেয় গাড়ি চলছে তারাও আগামীদিনে আর গাড়ি চালাতে চাইবে না । এই ক্ষেত্রে বেসরকারি বাসগুলির জন্য একটা গাইডলাইন তৈরি করা উচিত ছিল । সরকারি বাস থাকা সত্ত্বেও যখন বেসরকারি বাসগুলিকে জরুরি পরিষেবার জন্য নিয়োগ করা যখন হয়েছে তখন সরকারের আরও বেশি মানবিক হওয়া উচিত ছিল আমাদের প্রতি।"
মিনিবাস অপারেটর কো-অর্ডিনেশন কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি স্বপন ঘোষ বলেন, "হাসপাতালের যে সব আধিকারিকরা এই বেসরকারি বাসের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের আমরা বারবার বলছি যে আমাদের একটা রুট চার্ট দেওয়া হোক । রুট চার্ট পেলে আমাদের একটা সম্যক ধারণা হতে পারে যে কত কিলোমিটার গাড়িটি চলছে এবং তার উপর ভিত্তি করে কতটা জ্বালানি খরচ হতে পারে তা আন্দাজ করা সম্ভব । কিন্তু বারবার বলার পরেও তাঁরা রুট চার্ট দিতে পারছেন না । চালকদের পাওনা টাকাও দেওয়া হচ্ছে অনেক দেরি করে। কখনও 7 দিন আবার কখনও 10 দিন পরেও টাকা দেওয়া হচ্ছে । এছাড়া বাসগুলি জরুরি পরিষেবায় দেওয়া হচ্ছে বলে মালিকদেরও কিছু টাকা দেবে সরকার । সে টাকা কবে পাবে তা জানা নেই।"