কলকাতা, 14 মার্চ : একুশের রাজ্য বিধানসভা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা প্রচারকদের বহিরাগত আখ্যা দিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল । মূলত, নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের মানুষ সেই বহিরাগত তকমা পাওয়া নেতা-মন্ত্রীদের প্রত্যাখ্যান করেছিল । এবার বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে সেই বহিরাগত তত্ত্বই (BJP-Left Attacks TMC on Outsider Issue) ।
আসানসোলে বিহারীবাবু শত্রুঘ্ন সিনহাকে প্রার্থী করায়, পদ্ম শিবির একেই তাদের নির্বাচনী অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে । তাদের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির বহিরাগত নেতাদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আপত্তি থাকলেও এখন তৃণমূলের ভরসা সেই বহিরাগত নেতারা ।
আরও এক ধাপ এগিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Bengal BJP President Sukanta Majumder) অভিযোগ করেছেন, এই মুহূর্তে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস নতুন করে কোনও নেতা খুঁজে পাচ্ছেন না ৷ ফলে তাঁদের ভরসা করতে হচ্ছে বিজেপি-ত্যাগী নেতাদের উপর । তাঁর কটাক্ষ, তবে কি তৃণমূল কংগ্রেসে ভূমিপুত্রের অভাব রয়েছে ?
শুধু রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপি নয়, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অপর বিরোধী দল সিপিএমও । প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসে কর্তার ইচ্ছায় কর্ম চলছে । আর তাই বালিগঞ্জে প্রার্থী হয় আসানসোলের বাবুল আর আসানসোলে প্রার্থী হন বিহার ফেরত শত্রুঘ্ন ।’’
তিনি অভিযোগ করেছেন, গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় যতই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ভূমিপুত্র, বাংলার মেয়ে এসব কথা বলে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করুক, আসলে বাংলা বা বাংলার মানুষ নয়, জয়ের জন্য যতরকম পন্থা অবলম্বন করা যায় তৃণমূল করতে প্রস্তুত ।
যদিও বিরোধী অর্থাৎ বাম-বিজেপির এই অভিযোগকে ভূতের মুখে রাম নাম বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ফিরহাদ হাকিম । এদিন তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ বিজেপি বা সিপিএম শত্রুঘ্ন সিনহা বা বাবুলকে নিয়ে নানা কথা বলছেন । কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, এই বিজেপি বিভিন্ন ভোটে বহিরাগত প্রার্থীদের এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে । কই তখন তো বিজেপির বিরোধিতা করতে শোনা যায়নি সিপিএমকে ।
এদিন বারাণসী থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতার মেয়র । তিনি বলেন, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনের সময় বারাণসী প্রার্থী করা হয়েছিল গুজরাত থেকে এনে । তার মানে কি এটা ধরে নিতে হবে, উত্তরপ্রদেশে সে সময় এমন কোনও প্রার্থী ছিলেন না, যিনি বারাণসী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন । আসলে এসব বিজেপি এবং সিপিএমের ভাবের ঘরে চুরি । তারা বুঝে গিয়েছে পরাজয় নিশ্চিত । তাই বহিরাগতের অভিযোগ তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন ।’’
আরও পড়ুন :Asansol-Ballygunge Bye Election 2022 : তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় চমক, আসানসোলে শত্রুঘ্ন ও বালিগঞ্জে বাবুল