কলকাতা, 5 মার্চ : কলকাতা-সহ চার পৌরনিগম ও 108টি পৌরসভার ভোটে বিজেপির যে ভরাডুবি হয়েছে, তার জন্য সাংগঠনিক দুর্বলতাই দায়ী (BJPs poor Performance in Bengal Civic Polls 2022) ৷ শনিবার কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে আয়োজিত বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে এই তত্ত্বই উঠে এসেছে (Bengal BJP Organisational Meeting) ৷ যেহেতু গোটা বিষয়টি গেরুয়া শিবিরের অন্দরে আলোচনা হয়েছে, তাই এই নিয়ে কেউই মুখ খুলতে নারাজ ৷ তবে বিজেপির একটি সূত্র থেকে এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে ৷
ওই সূত্রের দাবি, এদিন বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী বৈঠকে জানিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গে সাংগঠনিকভাবে বহু জায়গায় বিজেপি এখনও দুর্বল (BJP leaders admit that Organisation is weak in Bengal) । উত্তরবঙ্গ ছাড়া বাকি অংশে দলের সংগঠনিক পরিস্থিতি খারাপ । সেই কারণেই পৌর নির্বাচনে ব্যর্থ হতে হয়েছে ৷ তবে সাংগঠনিক এই দুর্বলতা দূর করে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তাও দেওয়া হয়েছে ৷ দলের অভিজ্ঞ নেতাদের এই বিষয়ে বাড়তি দায়িত্বও নিতে বলা হয়েছে বলে ওই সূত্রের দাবি ৷
বিজেপির ওই সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, চলতি মার্চেও দলের নিচুস্তরে সাংগঠনিক রদবদল করা হবে ৷ জেলা কমিটি আগেই গঠন করা হয়েছে ৷ এবার মণ্ডল, শক্তিকেন্দ্র, মোর্চা কমিটি গঠন করতে জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ 31 মার্চের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন অমিতাভ চক্রবর্তী ৷
তাঁর নির্দেশ, যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাঁদের মাপকাঠিও নির্ধারণ রাজ্য নেতৃত্ব করেছে বলে ওই সূত্রের দাবি ৷ 45 বছরের কমবয়সীদের দায়িত্ব দিতে হবে ৷ যেহেতু একেবারে স্থানীয় এলাকায় লড়াই করতে হবে, তাই লড়াকু মনোভাবের নেতাদেরই মণ্ডল সভাপতি করতে হবে ৷ আর দেখে নিতে হবে যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা কতটা রয়েছে ৷
বিজেপির সাম্প্রতিক সাংগঠনিক রদবদলের পর বিভিন্ন নেতা বিদ্রোহ করেছেন ৷ কখনও তা রাজ্যস্তরে হয়েছে, আবার কখনও জেলাস্তরে বিদ্রোহ হয়েছে ৷ ওই সূত্রের দাবি, অমিতাভ বৈঠকে জানিয়েছেন, পদ না থাকলে, কার্যকর্তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন । এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় স্থানীয়স্তরে দলের মধ্যে আলোচনা করতে হবে ৷ এছাড়া রাজ্যস্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেও সমস্যার সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি ৷
ওই সূত্রের দাবি, একই সঙ্গে অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টিম নিয়ে কাজ করার প্রবণতা এখন কম । আমাদের নজর এখন টিমে জোর দেওয়াই । দল কাঠামো মেনে চলেছে বলেই এগিয়েছে ।’’ তাই দ্রুত সংগঠনের কাঠামো ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷ পাশাপাশি বলেছেন, ‘‘কোথাও কোথাও দেখি একজনই সব দায়িত্ব নিচ্ছেন, এটা কেন হবে ? আর কোথাও কেউ নেই ? এগুলো বদলাতে হবে । সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে । ১৯-এ আমরা এগিয়েছি, কারণ আমাদের সংগঠন জয়ের একটা বাতাবরণ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল, তাই আমরা জিতেছি । জয়ের স্বাদ পেয়েছি । আর এখন নেই বলেই এই মুহূর্তটা চ্যালেঞ্জিং ।’’