কলকাতা, 23 জুন : অধ্যক্ষদের বৈঠকে লোকসভার অধ্যক্ষ (Speaker of Loksabha) ওম বিড়লার (Om Birla) কাছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে (Jagdeep Dhankhar) নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার (West Bengal Assembly) অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee) । সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজ্যপাল (Governor of West Bengal) বিধানসভার প্রশাসনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন । এখানেই শেষ নয় ৷ তিনি আরও একধাপ এগিয়ে অভিযোগ করেছেন, রাজ্য বিধানসভায় পাস হওয়া বিলও দীর্ঘ সময় আটকে রাখছেন রাজ্যপাল । একই সঙ্গে ওই বৈঠকে তিনি রাজ্যে আট দফার ভোট নিয়েও নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ।
মঙ্গলবারের বৈঠকে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, অহেতুক রাজ্যপাল বিধানসভার প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন । তাঁর অভিযোগ, বিধানসভায় হস্তক্ষেপের এক্তিয়ার রাজ্যপালের নেই । অথচ রাজ্যপাল বারংবার বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন । শুধু তাই নয়, বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে পাস করা বিল তিনি আবার ফেরত পাঠাচ্ছেন । বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা অনুসারে এই বিষয়টি নজিরবিহীন । অতীতে কোথাও এভাবে রাজ্যপালকে বিধানসভার কাজ কর্মে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়নি ।
আরও পড়ুন :28 জুন পর্যন্ত নারদ মামলার শুনানি স্থগিত হাইকোর্টে
লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর অভিযোগ, ২০২০-তে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে আটজন বিধায়কের মৃত্যু হয়েছিল । ২০২১-এ করোনা আক্রান্ত হয়ে দু’জন বিধায়কের মৃত্যু হয়েছে । আট দফার ভোটের জন্যই এমনটা হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীও (Chief Minister) কম দফায় ভোট চেয়েছিলেন, কিন্তু সেকথা শোনা হয়নি ।
এই নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র তথা বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy) বলেন, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত সঙ্গত । কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যপাল যেভাবে বারবার পরিষদীয় রীতিনীতিতে হস্তক্ষেপ করছেন তা কাঙ্ক্ষিত নয় ৷ সেদিক থেকে বিচার করলে সঠিক কথাই বলেছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । দলত্যাগ বিরোধী আইন বা বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিবিআই-এর অনুমতি, প্রতি ক্ষেত্রেই রাজ্যপাল যে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, তা সংবিধানসম্মত নয় বলেই এই অভিযোগ । এবং আমার মনে হয় এই অভিযোগ 100 শতাংশ বাস্তবসম্মত ।’’
আরও পড়ুন :Separate Statehood : বিজেপি সাংসদদের বিরুদ্ধে থানায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ
অন্যদিকে প্রাক্তন বাম (Left Front) পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) বলেন, ‘‘অতীতেও রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্ঘাত দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে । তবে সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে রাজ্যপাল বিধানসভা সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতি সক্রিয়তা দেখিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক । কিন্তু এই কথাও মনে রাখতে হবে নন্দীগ্রাম পরবর্তী সময় তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধির (Gopal Krishna Gandhi) সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) সম্পর্ক মধুর না হলেও সঙ্ঘাত এই পর্যায় পৌঁছায়নি । তাই দোষ যে শুধু রাজ্যপালের এ কথা ভাবলে ভুল হবে ৷ সরকারের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে ।’’