কবিতার নাম "বোধন"৷ যেখানে আশ্চর্য মুন্সিয়ানায় মহামারি পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ যেন আজকের পৃথিবীর চিত্রই উঠে এসেছিল !
"পৃথিবী উদাস, শোনো হে দুনিয়াদার!
সামনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু-কালো পাহাড়
দগ্ধ হৃদয়ে যদিও ফেরাও ঘাড়
সামনে পেছনে কোথাও পাবে না পার:
কি করে খুলবে মৃত্যু-ঠেকানো দ্বার-
এই মুহূর্তে জবাব দেবে কি তার?"
আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম নাম সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ রবীন্দ্র পরবর্তী কবি হওয়া সত্ত্বেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গ স্পর্শ করা এই কবির নাম উচ্চারিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজি নজরুল ইসলামের মতো মহাকবিদের সঙ্গে৷ সুকান্তর অধিকাংশ রচনা প্রকাশিত হয় মৃত্যু পরবর্তীকালে ৷ জীবৎকালে তাঁর কবিতা ততখানি চর্চিত ছিল না৷ অথচ সেই কবিই মৃত্যুর পর বিশ শতকের অন্যতম জনপ্রিয় কবি হয়ে ওঠেন ৷ সুকান্ত ভট্টাচার্যের কাব্যভাবনায় প্রভাবিত পরের প্রজন্মের প্রথিতযশা কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত সংগীত পরিচালক সলিল চৌধুরি প্রমুখ ৷ সলিল চৌধুরি সুকান্তর কবিতা থেকে জনপ্রিয় গান তৈরি করেন ৷ কিন্তু এই কবি পাঠকমনে এতখানি প্রভাব বিস্তার করেন কীভাবে ?
অন্যতম কারণ, সুকান্তর কবিতার বহুমুখী চরিত্র ৷ সমাজচিন্তা, জাতীয়তাবাদ, মানবিকতা, এমননকী রোম্যান্টিসিজ়মও তাঁর কবিতার বিষয় ৷
সুকান্ত ভট্টাচার্য যদি আর তিন মাস বাঁচতেন তাহলে হয়ত তাঁর জীবনের সেরা উপহার পেতেন! কবির মত্যুর ঠিক তিন মাস দু'দিন পরেই সেই তারিখ---15 অগাস্ট, 1947 ৷ কবির প্রাণাধিক দেশ স্বাধীন হয় ৷ বেঁচে থাকলে এই দিনে 21 শে পা দিতেন ৷ কিন্তু TB রোগে মৃত্যু হয় ৷ আজ বেঁচে থাকলে 95 বছর বয়স হত সুকান্ত ভট্টাচার্যর ৷