কলকাতা, 30 জুলাই : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির (Bengal SSC Scam) অভিযোগ নিয়ে গত কয়েকমাসে উত্তাল হয়েছে বাংলা ৷ আদালতের নির্দেশে সিবিআই (CBI) তদন্ত শুরু হতেই একে একে ডাক পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) হেভিওয়েট নেতাদের ৷ ঠিক এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে সিবিআইকে তদন্ত করতে দিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bengal CM Mamata Banerjee) সরকার ৷ রাজ্যসভায় পেশ করা কেন্দ্রীয় সরকারের একটি তথ্য থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে ৷
স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা ৷ বাংলার প্রধান বিরোধী দল বিজেপি (BJP) থেকে সিপিএম (CPIM)-কংগ্রেসও (Congress) এই নিয়ে সরব হয়েছে ৷ কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসক দলকে ৷ বিজেপির রাহুল সিনহা (BJP Leader Rahul Sinha) তো বলেই দিলেন যে সিবিআই তদন্ত শুরু করলে বিপদ বাড়বে, তা আঁচ করেই ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না নবান্নের তরফে ৷
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ওই তথ্য সংসদের উচ্চকক্ষে পেশ করেন মোদি সরকারের (Modi Government) মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং ৷ তিনি জানান, দেশের ছ’টি রাজ্য গত ছ’মাস বা তার বেশি সময়ে 221টি সিবিআই তদন্তের অনুমতি দেওয়ার ছাড়পত্র আটকে রেখেছে ৷ ওই ছয় রাজ্যের তালিকায় পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে ৷ পশ্চিমবঙ্গে এমন মামলার সংখ্যা 27টি ৷
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও রাজ্যে কোনও মামলার তদন্ত করতে গেলে সিবিআইকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয় ৷ কিন্তু বারবার অনুমতি দেওয়ার প্রশাসনিক জটিলতা কাটাতে রাজ্যগুলি এই নিয়ে সিবিআইকে জেনারেল কনসেন্ট দিয়ে রাখে ৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কয়েকমাস আগে এই জেনারেল কনসেন্ট তুলে নিয়েছেন ৷ ফলে এখন বাংলায় প্রতিটি মামলার তদন্তের ক্ষেত্রেই সিবিআইকে নবান্নের কাছে ছাড়পত্র চাইতে হয় ৷ যা 27টি মামলার ক্ষেত্রে আটকে আছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র ৷
এই নিয়ে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহার বক্তব্য, মমতা যখন বিরোধী নেত্রী ছিলেন, তখন সবচেয়ে বেশি সিবিআই তদন্ত চাইতেন ৷ সারা দেশের কোনও বিরোধী নেতা এতবার সিবিআই তদন্ত চাননি ৷ সরকারে আসার পর বুঝতে পারলেন সিবিআই তদন্ত হলে তিনি ঘরে-বাইরে বিপদে পড়বেন ৷ ঘরেও বিপদ, দলের মধ্যেও বিপদ৷ সেই কারণে সিবিআইকে আটকাতে চাইছেন ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গত কয়েক বছরে আদালতের নির্দেশে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমেছে সিবিআই ৷ তার মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলায় তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতারা গ্রেফতার হয়েছেন ৷ সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সক্রিয় হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (Enforcement Directorate) ৷ তারা ইতিমধ্যে মমতার প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Arpita Mukherjee) গ্রেফতার করেছে ৷ উদ্ধার হয়েছে প্রায় 50 কোটি টাকা ৷