কলকাতা, 12 জুলাই : আষাঢ় শেষের দিকে অথচ এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই দক্ষিণবঙ্গে (Rain in South Bengal Districts) । যেটুকু বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত জলটুকু মিলছে না । আর এতেই সিঁদুরের মেঘ দেখছে নবান্ন । রাজ্যের কৃষি দফতর মনে করছে যে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা এভাবেই চললে আমন ধানের মরশুম বড় ধাক্কা খাবে । বিভিন্ন জেলা থেকে দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নবান্ন দেখেছে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে 47 শতাংশ । এখনই ভালো বৃষ্টিপাত না হলে ফল ভুগতে হবে বাংলার চাষিদের ।
এমনিতেই চালের ঊর্ধ্বমুখী দর চিন্তা বাড়াচ্ছে গৃহস্থের । কিন্তু বর্ষায় ঠিকমতো বৃষ্টি না হলে এই দাম আরও বাড়বে । এই মুহূর্তে এখনই সাধারণ মিনিকেট চালের দাম 48 থেকে 50 টাকা কেজি ছুঁয়েছে । ফলে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । কৃষি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে সবথেকে বৃষ্টির ঘাটতি বেশি রয়েছে মুর্শিদাবাদে । এরপরেই সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বীরভূম এবং নদীয়া জেলায় ।
এ বছর উত্তরবঙ্গে ভালোই বৃষ্টিপাত হয়েছে । অতিবৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও বন্যার মতো অবস্থা হয়েছিল । উত্তরবঙ্গের রাজ্য হলেও মালদায় এ বছর বৃষ্টিপাত সেভাবে হয়নি । আর সে কারণেই এই জেলায় ঘাটতি রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক । নবান্নের দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তরবঙ্গের মালদায় বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরিমাণ 67 শতাংশ । দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে 65 শতাংশ এবং বীরভূম ও নদীয়াতে ঘাটতির পরিমাণ যথাক্রমে 63 এবং 61 শতাংশ । এই অবস্থায় এই জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি বড় চিন্তার কারণ নবান্নের জন্য । ইতিমধ্যেই আমন ধানের কথা ভেবে সেচ দফতর (Irrigation Department) ও কৃষি দফতরকে (Cultivation Department) সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
নবান্ন সূত্রে খবর, মালদা জেলার এই মুহূর্তে আমন চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে । কারণ, জেলার খাদ্য ভাণ্ডার বলে পরিচিত গাজোলে ব্লকে এবার 3200 হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয় । দুই সপ্তাহ আগে থেকে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যে 2500 হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির কাজ শেষ । বীজতলা তৈরীর 20 দিনের মধ্যে চাষের কাজ শুরু করে দিতে হয় । কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এখনও সেই কাজ করা সম্ভব হয়নি । গাজোলের বেশ কিছু এলাকায় জলের অভাবে মরতে বসেছে বীজতলার ধানের চারা গাছ । বীজতলা কিভাবে বাঁচাবেন সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে কৃষকের ।