কলকাতা, 21 মার্চ:রাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচনে যে প্রার্থীরা লড়ছেন তার মধ্য়ে 25 শতাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি অপরাধের মামলা ৷ এ ক্ষেত্রে সব দলকে ছাপিয়ে গিয়েছে বামেরা ৷ প্রথম দফায় তাদের প্রার্থীদের 50 শতাংশের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা রয়েছে ৷ অ্য়াসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে ৷
এডিআর-এর রিপোর্ট বলছে, প্রথম দফার 191 জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র পেশের সময় যে হলফনামা দিয়েছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, 48 জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা ৷ 42 (22 শতাংশ)-জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে মামলা দায়ের রয়েছে ৷ 12 জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মহিলাদের উপর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে ৷ এই 12 জনের মধ্যে আবার একজন ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত ৷ আর 8 জনের বিরুদ্ধে রয়েছে খুনের মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ৷ খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে 19 জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৷
কোন দলের কতজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ?
সিপিএম -এর 18 জন প্রার্থীর মধ্যে 10 জন, বিজেপির 29 জন প্রার্থীর মধ্যে 12 জন, তৃণমূল কংগ্রেসের 29 জন প্রার্থীর মধ্যে 10 জন, জাতীয় কংগ্রেসের 6 জন প্রার্থীর মধ্যে 2 জন এবং এসইউসিআই-এর 28 জন প্রার্থীর মধ্যে 3 জন এবং বিএসপির 11 জন প্রার্থীর মধ্যে 1 জন নিজের হলফনামায় ফৌজদারি মামলার কথা ঘোষণা করেছেন ৷
বাংলায় প্রথম দফার 30টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে 7টিতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যেখানে তিনজন বা তার বেশি প্রার্থী হলফনামায় নিজেদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকার কথা জানিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন:8 দফায় বাংলার ভোট উৎসব, কোন জেলায় কবে ?
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা না মেনেই পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে এডিআর-এর রিপোর্টে ৷ বলা হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রাজনৈতিক দলগুলির উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি ৷ কারণ তারা আবারও ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত 25 শতাংশ প্রার্থীকে টিকিট দিয়ে তাদের পুরনো অভ্যেস অনুসরণ করেছে ৷ প্রথম দফার ভোটে রাজ্যের সব প্রধান দল 33 শতাংশ থেকে 56 শতাংশ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছে ৷
13 ফেব্রুয়ারি 2020 সালের নির্দেশে রাজনৈতিক দলগুলিকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ফৌজদারি মামলা চলা ব্যক্তিকে দল টিকিট দিলে তার কারণ জানাতে হবে এবং অন্যান্য ব্যক্তি যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি অপরাধের মামলা নেই, তাঁদেরকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়নি কেন, তার কারণও জানতে চাওয়া হবে ৷ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থীদের বাছাইয়ের কারণ অবশ্যই তাঁদের যোগ্যতা, কাজের সাফল্য ও মেধার সঙ্গে সম্পর্কিত হবে, নির্বাচনে তাঁদের জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি - এটা কারণ হিসেবে বিবেচ্য হবে না বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট ৷ শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ সত্ত্বেও যে ভাবে সব রাজনৈতিক দল প্রথম দফার নির্বাচনে ফৌজদারি অপরাধের মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রার্থী করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ ভোটের মুখে এই রিপোর্টে ভোটারদের মানসিক দ্বন্দ্ব প্রকট হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ৷