কলকাতা, 25 জানুয়ারি : দুর্গাপুজোর নবমীতে গোমাংস রান্না নিয়ে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তর মন্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি থেকে টলিপাড়া। আবার সোশাল মিডিয়ায় অভিনেত্রীকে খুন এবং গণধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে । যার প্রতিবাদে গর্জে উঠল টলিউড। মেট্রো চ্যানেলে প্রতিবাদে সভা করলেন কলাকুশলীরা।
সোমবারের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন দেবলীনা । ছিলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী থেকে শুরু করে কবি জয় গোস্বামী, সাংসদ নুসরত জাহান-সহ অন্যান্য একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
মেট্রো চ্যানেলে প্রতিবাদস্থলে অভিনেত্রী ও তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান এ দিনের সভায় দেবলীনা দত্ত বলেন, ''এই শতাব্দীতে এসেও যদি প্রকাশ্যে কথা বলার অধিকার না-থাকে, তাহলে এটা কীসের সভ্য সমাজ। যারা গোরু খাওয়াকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করছেন, যাঁরা একজন মহিলাকে শুধুমাত্র গোরুর মাংস খাওয়ার ঘটনায় দায়ী করে গণধর্ষণ করার ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন, এমনকী প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন, তাঁরা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল বলে নিজেদের দাবি করেন? আসলে গোরু একটি মাধ্যম। কই যখন কালীপুজোর দিন কুকুরের সামনে বাজি ফাটানো হয়, কোথায় থাকে তাঁদের সেই প্রতিবাদ?''
আরও পড়ুন : অসহিষ্ণুতা মাত্রা ছাড়িয়েছে, অকপট দেবলীনা
কোনও রাখঢাক না-করে দেবলীনা আরও বলেন, ''আমি ছোটোবেলায় মিশনারি স্কুলে অনেকটা সময় কাটিয়েছি। আমার বহু মুসলিম বন্ধুবান্ধব রয়েছেন। ফলে তাঁদের সংস্কৃতির সঙ্গে আমি অনেকটাই ওয়াকিবহাল এবং আমি নিজে একজন হিন্দু। ফলে এই সমাজে যদি আমি খাওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলি, তাতে এত আন্দোলন কেন হবে? যখন যন্ত্রপাতি দ্বারা একটি গোরুর দুধ দোয়ানো হয়, সেই সময়ে কি এই নেতারা দেখেছেন সেই গোরুর চোখ থেকে কীভাবে জল বেরোয়? সেই গোরুটি কীভাবে কষ্ট পায়? তখন প্রতিবাদ কোথায় থাকে?''
গোমাংস কাণ্ডে দেবলীনার পাশে দাঁড়িয়ে সরব অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ আরও পড়ুন: তৃণমূলে যোগ অভিনেত্রী কৌশানী ও ইম্পা প্রধান পিয়া সেনগুপ্তর
এ দিনের প্রতিবাদ সভায় একই সুর শোনা গিয়েছে কৌশিক সেন, ঋদ্ধি সেনের গলাতেও। পাশাপাশি বিজেপি নেতাদের এবং যারা বলেছে মহিলাদের গণধর্ষণ করা হবে, তার প্রতিবাদ জানান অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। তিনি বলেন, ''আমাদের জননেত্রী একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। কেউ যদি আমাদের বাংলার মা-বোনদের গণধর্ষণ করতে আসে, তাহলে কি আমরা ছেড়ে দেব? বাংলার ঘরে ঘরে ঝাঁটা রয়েছে। আয় দেখি কত সাহস। আমি কীভাবে হাঁটব, কী পোশাক পরব, কোন দেবতাকে মানব, কী পুজো করব, তা একটি রাজনৈতিক দল বলে দেবে?''