পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

কুরবান শা হত্যা মামলা : আদালতের নির্দেশ ছাড়া মুক্তি নয় আনিসুর রহমানের

কুরবান শা হত্যা মামলায় এখনই মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ আনিসুর রহমানের ৷ বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দেয়, আদালতের নির্দেশ ছাড়া 15 জুন পর্যন্ত মুক্তি পাবেন না আনিসুর ৷ আগামী 13মে ফের শুনানি হবে এই মামলার ৷

wb_kol_01_anisur -rahaman- not- to -release -without -any- compitent -court order_10003
কুরবান শা হত্যা মামলা : আদালতের নির্দেশ ছাড়া মুক্তি নয় আনিসুর রহমানের

By

Published : Apr 28, 2021, 4:09 PM IST

কলকাতা, 28 এপ্রিল : আদালতের নির্দেশ ছাড়া 15 জুন পর্যন্ত ছাড়া যাবে না আনিসুর রহমানকে ৷ নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের ৷ বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ৷ পাশাপাশি, কলকাতা হাইকোর্টে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে কুরবান শা হত্যার মামলা চালাতে চেয়ে আফজল আলি শা ( কুরবান শা-র দাদা) যে আবেদন করেছিলেন, সেই আবেদনও গ্রহণ করল আদালত ৷ একইসঙ্গে, কুরবান শা-র ভাগ্না মামলা প্রত্যাহারের যে আবেদন করেছিলেন, তা খারিজ করে দিয়েছে আদালত ৷ আগামী 13মে সকাল সোওয়া এগারোটায় বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে ৷

চলতি বছরের 26 ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে চলতে থাকা কুরবান শা হত্যা মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তিও জারি করে ৷ তমলুক দায়রা আদালত রাজ্যের সেই আবেদন মঞ্জুরও করে ৷ কিন্তু তারপর 2 মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য রাজ্যের ওই বিজ্ঞপ্তি এবং দায়রা আদালতের রায় খারিজ করে দেন ৷ পাশাপাশি তিনি নির্দেশ দেন, অভিযুক্ত আনিসুর রহমানকে যদি ইতিমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তাঁকে যেন পুলিশ পুনরায় গ্রেফতার করে ৷ সেই নির্দেশ মোতাবেক পদক্ষেপ করে পুলিশও ৷ সকালে জামিন পাওয়া আনিসুরকে বিকেলেই ফের গ্রেফতার হতে হয় ৷

হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে পরদিন সকালেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন আনিসুর রহমান ৷ এদিকে, কলকাতা হাইকোর্টে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন যে ব্যক্তি, সেই জহর শা-ও মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার আর্জি জানান ৷ এক্ষেত্রে তাঁর দাবি ছিল, মামলা করায় তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷ কিন্তু কুরবান শা-র দাদা আফজল আলি শা মামলাটি চালানোর সিদ্ধান্ত নেন ৷ গত 13 এপ্রিল প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দেয় ৷ তবে একইসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, মামলার নিষ্পত্তি এখনই হচ্ছে না ৷ সব পক্ষের বক্তব্য ভালো করে শুনে সিঙ্গল বেঞ্চই যত দ্রুত সম্ভব মামলার নিষ্পত্তি করা হবে ৷

আরও পড়ুন :করোনা সংক্রমণ রুখতে সার্কিট বেঞ্চের নির্দেশে ভাঙা হল অবৈধ নির্মাণ

বুধবার মামলার শুনানিতে আনিসুর রহমানের আইনজীবী বলেন, কলকাতা হাইকোর্টে প্রথম যিনি মামলা করেছিলেন, সেই জহর শা এই মামলা তুলে নিতে চেয়েছেন অনেক আগেই ৷ আদালতের উচিত তাতে সম্মতি দেওয়া ৷ অন্যদিকে, কুরবান শা-র দাদা আফজল আলি শা-র আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র বলেন, ‘‘এই মামলায় যেদিন নিম্ন আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার কথা, সেদিনই সাক্ষীদের অপহরণ করা হয়েছিল ৷ নিরন্তর তাঁদের ভয় দেখানো হয়েছে ৷ সব পক্ষের বক্তব্য না শুনে মামলা তুলে নেওয়ার আবেদনে অনুমতি দেওয়া যায় না ৷ কারণ এই ঘটনার একটা সামাজিক প্রভাব রয়েছে ৷’’ পাশাপাশি রাজ্যের তরফে অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘এই মামলায় রাজ্যের কোন ভূমিকা নেই ৷ রাজ্যের কিছু বলার নেই ৷ তবে মূল মামলাকারী জহর শা মামলা তুলে নেওয়ার যে আর্জি জানিয়েছেন, রাজ্য তার সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ সহমত।’’

সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এদিন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাঁর নির্দেশে বলেন, ‘‘মামলাকারীরা আদালতকে একটি পরীক্ষাগারের মতো ব্যবহার করতে পারেন না ৷ যখন খুশি মামলা করলেন, আবার যখন মনে হল মামলা তুলে নিলেন, এটা চলতে পারে না ৷ সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, এতে সত্য শেষ পর্যন্ত চাপা পড়ে যায় ৷ এই ধরনের মামলা প্রত্যাহারের সম্মতি দেওয়া মানেই ন্যায়ের অবমাননা করা ৷ আপাতত 15 জুন পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ ছাড়া আনিসুর রহমানকে জেল থেকে ছাড়া যাবে না ৷ আগামী 13মে ফের শুনানি হবে মামলার ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details