কলকাতা, 31 জুলাই :ইতিহাসের অধ্যাপিকা ৷ একইসঙ্গে, সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের আত্মজা ৷ এই দুই পরিচয়ের টানাপোড়েনেই কি বাংলার রাজনীতিতে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) মূল্যায়ন করতে গিয়ে খেই হারালেন অজন্তা বিশ্বাস (Ajanta Biswas) ? প্রশ্নটা উঠছেই ৷ কারণ, তৃণমূলের মুখপত্রে তাঁর লেখা ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক নিবন্ধে মমতা ও তাঁর লড়াই সম্পর্কে একের পর এক তথ্য তুলে ধরলেও মমতার প্রধান প্রতিপক্ষ সিপিএম তথা বামেদের নিয়ে কোনও শব্দই খরচ করেননি অজন্তা ৷ তাহলে কি মনে-প্রাণে বামপন্থী হওয়ার সুবাদেই সিপিএমের সমালোচনা এড়িয়েছেন তিনি ? তাই যদি হয়, তাতে কি তাঁর উপস্থাপনা পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে না ? উত্তর নেই বামেদের মুখে ৷ ঘটনায় অন্যায্য কিছু দেখছে না তৃণমূলও !
বাংলার রাজনীতিতে নারী শক্তির অবদান প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে বাম নেত্রী গীতা মুখোপাধ্যায়, অপরিজিতা গোপ্পি থেকে কংগ্রেসের আভা মাইতি, পূরবী মুখোপাধ্যায় হয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কাছে পৌঁছেছে অজন্তার কলম ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, অন্যদের সম্পর্কে আলোচনার সময় অজন্তা তাঁদের ‘বিশিষ্ট নেত্রী’ বলে উল্লেখ করেছেন ৷ কিন্তু মমতার পরিচয় দিয়েছেন ‘জননেত্রী’ হিসাবে ৷ তবে অজন্তা নিজে কিন্তু তাঁর লেখায় মমতাকে জননেত্রীর খেতাব দেননি ৷ বরং, মানুষই যে মমতাকে জননেত্রীর স্বীকৃতি দিয়েছে, সেটাই উল্লেখ করেছেন মাত্র ৷
আরও পড়ুন :BJP Documentary : মমতার ‘‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন’’ বানচাল করতে হিংসার তথ্যচিত্র হাতিয়ার বিজেপির
কালীঘাটের টালির চাল থেকে নবান্নের 14 তলা ৷ মমতার সাফল্যের পিছনে লড়াই প্রশ্নাতীত ৷ কোনও ব্যক্তিবিশেষ মমতার গুণমুগ্ধ বা সমালোচক হতেই পারেন ৷ কিন্তু মমতার অতি বড় বিরোধীও তাঁর লড়াইকে অস্বীকার করবেন না ৷ এহেন মমতার উত্থানের শুরুটাই ছিল সিপিএম তথা বাম-বিরোধিতা দিয়ে ৷ এই বিষয়ে তাঁর নাছোড় মনোভাবই তাঁকে একটা সময় ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে ৷ কাজেই সিপিএম বা বামেদের পরাজয় এড়িয়ে মমতার সাফল্য ব্যাখ্যা করার অর্থ বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূলনেত্রীর জয়যাত্রার কাহিনীকে অসম্পূর্ণ করে রাখা ৷ অথচ, অজন্তার নিবন্ধের শিরোনাম হল ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ ৷ সেক্ষেত্রে সিপিএমকে বাদ দিয়ে মমতাকে শুধুমাত্র জননেত্রী বললে কি নেত্রী মমতার শক্তিকে খাটো করা হয় না ?