কলকাতা, 22 অক্টোবর: টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন দলে দলে মানুষ ৷ পুজো কাটতেই শহরে সংক্রমণের বৃদ্ধি ঘটছে ৷ তা নিয়ে উদ্বেগে কলকাতা পৌরনিগমও ৷ তাতেই ফের শহরে নতুন করে কোয়ারান্টাইন সেন্টার এবং সেফ হোম তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের ব্যবস্থাও হচ্ছে, যাতে সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কি না, খুঁটিয়ে জানবেন পৌরনিগমের কর্মীরা ৷
গত 24 ঘণ্টায় শহরে নতুন করে 319 জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৷ এর মধ্যে কলকাতা পৌরনিগম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 242 জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৷ সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে সংক্রমণ মিলেছে 77 জনের শরীরে ৷ এঁদের মধ্যে 150 জনের করোনার দু’টি টিকাই নেওয়া হয়ে গিয়েছে ৷ একটি টিকা নিয়েছেন 15 জন ৷ টিকাকরণ হয়নি 50 জনের ৷ তাতেই দুশ্চিন্তার মেঘ ঘনাচ্ছে ৷
আরও পড়ুন:Life Imprisonment: আসানসোলে পোস্টমাস্টার খুনের ঘটনায় 2 জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে শহরে নতুন করে কোয়ারান্টাইন সেন্টার এবং সেফ হোম তৈরির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে ৷ কোনও শিশু করোনায় আক্রান্ত হলে, মায়ের সঙ্গে তার থাকার জন্য উত্তর কলকাতার হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনে একটি সেফ হোম তৈরি করা হচ্ছে ৷ ক্রিস্টোফার রোডে পৌরনিগমের চম্পামনি মেটারনিটি হোমে আরও একটি কোয়ারান্টাইন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে ৷ একই সঙ্গে বাইপাসের ধারে প্রতিদিনের একটি সেফ হোম তৈরি করছে পৌরনিগম ৷
কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসনিক সদস্য তথা স্বাস্থ্য বিভাগের অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তদের বাডি় বাড়ি গিয়ে কনট্যাক্ট ট্রেসিং করা হবে, যাতে বোঝা যায় পরিবারের ক’জন সদস্য সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন ৷ সকলের করোনা পরীক্ষা করা হবে ৷ উপসর্গহীন সংক্রমিত কেউ রয়েছেন কি না, তাও জানবেন পুরকর্মীরা ৷ সেক্ষেত্রে তাঁরা নিভৃতাবাসে ছিলেন কি না, বাড়ির জীবাণুমুক্তকরণ হয়েছে কি না, সে সব দেখা হবে ৷ না-হয়ে থাকলে জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা করবে পৌরনিগম ৷
আরও পড়ুন:Women Security: উৎসব মরশুমে আসানসোল-দুর্গাপুরে মহিলাদের সুরক্ষায় ‘শক্তি’ বাহিনী
এ ছাড়াও, পৌরনিগম সবক’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে সচল করা হচ্ছে ৷ স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও বেশি তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ প্রয়োজনে ফোনে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে ৷ কেউ যদি নিজেই সরকারি হোমে যেতে যান, তার ব্যবস্থা করে দেবে পৌরনিগম ৷ অন্য দিকে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি, দক্ষিণ কলকাতার বেহালার 116 নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপও উদ্বেগে রেখেছে শহরবাসীকে ৷ অতীনবাবু জানিয়েছেন, দুর্গাপুজদোর দিনগুলিকে বাদ দিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে মশার উপদ্রব দমনের কাজ শুরু হয়েছে ৷ প্রত্যেক ওয়ার্ডে গিয়ে ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে ৷ তবে এ বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গির প্রকোপ তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছেন অতীনবাবু ৷ যদিও বেহালাবাসীর দাবি, লাগাতার বৃষ্টিতে এখনও এলাকার ইতিউতি জল জমে রয়েছে ৷ তা থেকেই রোগ বাড়ছে ৷
আরও পড়ুন:Female Priests : এবার দুর্গাপুজোও করতে চান টোলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বৈশাখী
শুক্রবার পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই 116 নম্বর ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন ৷ সেখানে 225টি বাড়ি পরীক্ষা করে দেখে , তিন জায়গায় ডেঙ্গি বহনকারী মশার লাভা দেখতে পান তাঁরা ৷ তবে ওই তিনটি বাড়িরই নির্মাণকার্য চলছে ৷ লোকজন থাকেন না ৷ তাই কিছুটা হলেও স্বস্তি বলে মনে করছে পৌরনিগম ৷ তবে তিনটি বাড়িতেই নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ আগামী চার দিনের মধ্যে জমা জল পরিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাতে ৷ নইলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পৌরনিগম ৷