কলকাতা, 31 জানুয়ারি : কলকাতা থেকে ফের কল সেন্টারের নামে প্রতারণা চক্রের হদিশ । একটি বহুজাতিক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী পরিচয় দিয়ে অ্যামেরিকার নাগরিকদের প্রতারণার অভিযোগ ৷ ঘটনায় 10 জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার নাসিরুদ্দিন রোডে একটি বাড়ির একতলায় চলছিল এই ভুয়ো কল সেন্টার । ভাড়া নিয়ে চালানো হচ্ছিল কাজ । প্রতারণার সঙ্গে জড়িতরা নিজেদের ওই বহুজাতিক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার রিফান্ড সেকশনের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ফোন করত অ্যামেরিকার নাগরিকদের । অ্যামেরিকান অ্যাকসেন্টে বলা হত কথা । সেভাবে সহজেই অর্জন করা হত বিশ্বাস । টার্গেটে থাকা অ্যামেরিকার নাগরিকদের বলা হত, পুরানো অপারেটিং সিস্টেমটি তাঁদের কম্পিউটারে আর কাজ করবে না । আপডেটেড অপারেটিং সিস্টেম ডাউনলোড করতে হবে । এর জন্য পাঠানো হত একটি লিঙ্ক । আসলে সেটি ম্যালওয়্যার । সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ব্লক হয়ে যেত কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ । তারপর দাবি করা হত মোটা অঙ্কের টাকা ।
এ বিষয়ে অভিযোগ আসে কলকাতা পুলিশে । সেই সূত্র ধরে চালানো হয় অভিযান । তাতে ধরা পড়ে মফিদুল ইসলাম লেনের মহম্মদ কালাম, রিয়াজউদ্দিন, আঞ্জুমান রোডের আফাক খুরশিদ, লিন্টন স্ট্রিটের মহম্মদ ইমরান, দিলকুশা স্ট্রিটের শামস তানভির, বেডফোর্ড লেনের মহম্মদ সোহেব, আবদুল লতিফ স্ট্রিটের আলি হামজা, তপসিয়া রোডের মহম্মদ মিরাজ, শরিফ লেনের শেখ ইরফান, হাতিবাগান রোডের সেন জাফর । তাদের কাছে উদ্ধার হয়েছে ল্যাপটপ, 11 টি মোবাইল, ATM কার্ডসহ আরও বেশ কিছু জিনিসপত্র । পাওয়া গেছে কয়েক হাজার ডেটাবেস ।
গতবছরের অক্টোবরে এমনই একটি অভিযোগ পেয়ে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল সাতজনকে । অন্য একটি বহুজাতিক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার নাম করে ফোন যেত ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় । বলা হত দেওয়া হবে টেকনিকাল সাপোর্ট । একইরকমভাবে করা হত প্রতারণা । ওই তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের হয়ে এবিষয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ভূপিন্দর সিং বিন্দ্রা । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে পুরো চক্রটি চালানো হচ্ছে তপসিয়ার উইজ়ার্ড হাউজ় এবং রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের ভিশাল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে । ঘটনায় দু'টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় সাতজনকে। এই সাতজন ইউরোপের কয়েক হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। কলকাতা পুলিশের এই সাফল্যর পরে নগরপালকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন স্বয়ং লন্ডনের পুলিশ কমিশনার ।