কলকাতা, 8 জুলাই : প্রকাশিত হয়েছে 2019 সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার স্ক্রুটিনি ও রিভিউয়ের ফলাফল । ফল প্রকাশের পর বড়সড় রদবদল মেধাতালিকায় । গতকাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এবছর মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় প্রথম দশে স্থান পেয়েছিল মোট 51 জন পরীক্ষার্থী । কিন্তু রিভিউ ও স্ক্রুটিনির ফলাফল প্রকাশের পর এই ছবিটা বদলে যায় ৷ প্রথম দশে থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে 10 জন কমে বাদ পড়েছে । প্রথম দশের মেধা তালিকায় আর 51 জন নয়, 41 জন পরীক্ষার্থী রয়েছে । এই 41 জনের মধ্যে যেমন আগের মেধা তালিকায় থাকা পরীক্ষার্থীরা রয়েছে, তেমনই মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে নতুন কয়েকজন পরীক্ষার্থী ।
এবিষয়ে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এবছর প্রথম দশের যে প্রভিশনাল মেরিট লিস্ট আমরা বের করেছিলাম তাতে 51 জনের নাম ছিল । এখন দশম স্থান পর্যন্ত 41 জন রয়েছে । 10 জন কমে গেছে । আগের মেধাতালিকায় যে প্রথম স্থান পেয়েছিল তার প্রাপ্ত নম্বর ছিল 694 ৷ দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পাওয়া পরীক্ষার্থীরা পেয়েছিল যথাক্রমে 691 ও 689 নম্বর । তৃতীয় যারা হয়েছিল তাদের ভিতরে একজন রায়গঞ্জ গার্লস হাই স্কুলের ক্যামেলিয়া রায় তার এক নম্বর বেড়েছে । তবে সে তৃতীয় স্থানেই রয়েছে । কিন্তু, বাকিদের তো কোনও নম্বর বাড়েনি । তাই তাদের স্থান কমে ফোর্থ ব়্যাঙ্কে চলে গেছে । প্রথম দিকে আর কোনও পরিবর্তন হয়নি ।"
মূলত, তৃতীয় স্থানাধীকারীর নম্বর পরিবর্তন হওয়ায় জেরে, আগের মেধা তালিকার প্রতিটি ব়্যাঙ্কই এক স্থান করে নেমে এসেছে । দশম স্থানেও বহু রদবদল হয়েছে । এবিষয়ে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, " 681 নম্বর ছিল দশম স্থান পর্যন্ত । এবার 680 নম্বর পাওয়া একজন আলিপুরদুয়ারের বারোভিসা হাইস্কুলের আরিন সাহার দুই নম্বর বেড়েছে ৷ 682 নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে সে । আগের মেধাতালিকায় 681 নম্বরটাই ছিল দশম স্থান দখল করা পরীক্ষার্থীর নম্বর । এবার 682 নম্বরটা সেই জায়গা দখল করল ৷ কোচবিহারের দিনহাটা গার্লস হাইস্কুলের তনিষ্ঠা দত্ত 680 পেয়েছিল, সে 682 পেয়ে দশম স্থানে উঠে এসেছে । বাঁকুড়ার রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যাপীঠের সায়ন মণ্ডল 680 থেকে 682 নম্বর পেয়ে দশম স্থানে উঠে এসেছে । দশম স্থানে আরও পরিবর্তন এসেছে । 674 পেয়েছিল বাঁকুড়া জেলা স্কুলের কৌস্তভ সিংহ । তার 8 নম্বর বেড়ে 682 নম্বর হয়েছে ৷ দশম স্থানে উঠে এসেছে সে ৷ বাঁকুড়ার বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুলের অস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় 678 নম্বর পেয়েছিল, রিভিউয়ের পর সে 682 নম্বর পেয়েছে । 4 নম্বর বেড়ে দশম স্থানে উঠে এসেছে সে ৷ " তিনি আরও বলেন, " আগে 681 নম্বরটা দশম স্থান ছিল । এবারে 681 নম্বর একাদশ স্থানে চলে এল । এই একাদশ স্থানে কিন্তু অনেকে চলে এসেছে নিচের দিক থেকে । 680 নম্বর পেয়েছিল কিন্তু 681 নম্বর পেয়ে উপরে উঠে এসেছে এরকম নতুন 8 জন আছে । যেহেতু, 681 নম্বর আগের মেধাতালিকায় ছিল, তাই তাদেরও তালিকায় রাখলাম । আর 682 নম্বর পেয়ে দশম স্থানে বাইরে থেকে পাঁচজন এসেছে ।"
মেধা তালিকা এইভাবে একেবারে ওলট-পালট হওয়ার কারণ কী? কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, " আগে যেটা হতো, প্রত্যেকটা নম্বরেই একজন করে স্টুডেন্ট থাকত । ফলে, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় কন্টিনিউয়াস নম্বর থাকত । এটাই প্রথম বছর যেখানে প্রথম স্থানাধিকারী পেয়েছে 694 নম্বর ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারী পেয়েছে 691 নম্বর ৷ 693 ও 692 নম্বরে কেউ নেই । আবার 690 নম্বরে কেউ ছিল না । 689 নম্বরে ছিল । যে 689 নম্বর পেয়েছিল, সে 690 নম্বর পেয়ে গেল । ফলে, তার স্থান ঠিক রইল ৷ সে থার্ড ছিল, থার্ড রইল । তার পরের জনের স্থান পিছিয়ে গেল । এভাবে একটা করে ব়্যাঙ্ক পিছিয়ে গেল ।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের 2019 সালে মোট 10 লাখ 50 হাজার 397 জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল । পোস্ট পাবলিকেশন স্ক্রুটিনি ও পোস্ট পাবলিকেশন রিভিউয়ের জন্য আবেদন করেছিল মোট 36 হাজার 874 জন । যেটা মোট পরীক্ষার্থীর 3.51 শতাংশ । তার মানে পরীক্ষার্থীদের 96.5 শতাংশ তাদের রেজ়াল্ট নিয়ে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট । এই যে 3.51 শতাংশ আবেদন করেছিল তার মধ্যে রিভিউ করেছিল 2 হাজার 703 জন । যার মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে 683 জনের অর্থাৎ 25.27 শতাংশের । যেটা গত বছরের তুলনায় কম । গত বছর 3 হাজার 13 জন PPR করেছিল ও 785 জনের পরিবর্তন হয়েছিল । যেটা গতবছর 26.05 শতাংশ ছিল, এবছর সেটা 25.27 শতাংশ । স্ক্রুটিনির জন্য এবারে আবেদন করেছিল 34 হাজার 171 জন । তাদের মধ্যে 9 হাজার 212 জনের পরিবর্তন হয়েছে । 26.96 শতাংশ পরিবর্তন হয়েছে । যা গতবারের তুলনায় একটু বেশি ।"