পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘেরাও করে অশ্লীল মন্তব্য, 6 পড়ুয়াকে সাসপেন্ড

উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ফ্যাকাল্টি ও আধিকারিককে ঘেরাও করা ও তাঁদের উদ্দেশে অশ্লীল মন্তব্য করার অভিযোগে 6 পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।

By

Published : Nov 24, 2019, 11:06 PM IST

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

কলকাতা, 24 নভেম্বর : উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ফ্যাকাল্টি ও আধিকারিককে ঘেরাও এবং তাঁদের প্রতি অশ্লীল মন্তব্য করার অপরাধে 6 পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । আজ সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানান আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি । সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়া ও একজন রিসার্চ স্কলার ।

ঘটনার সূত্রপাত 20 নভেম্বর । ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউটাউন ক্যাম্পাসে প্রথম সমাবর্তন নিয়ে বৈঠক করছিলেন উপাচার্য । বৈঠক চলাকালীন 30 জন পড়ুয়া ঘরের বাইরে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখায় । বৈঠক শেষ করে উপাচার্য নিজের অফিসের দিকে যেতে শুরু করলে পড়ুয়ারা তখনও স্লোগান দিতে থাকে ও অশ্লীল মন্তব্য করে বলে অভিযোগ ৷ সিমেস্টার ফি না দিতে পারলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার ও স্কলারশিপ সংক্রান্ত কয়েকটি দাবি ছিল বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের । বিষয়গুলি দেখার আশ্বাস দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের তরফে । কিন্তু অভিযোগ, তারপরেও উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখে তারা । অবশেষে ওইদিন রাত 9 টা নাগাদ উপাচার্যকে যেতে দেয় পড়ুয়ারা । উপাচার্যের অভিযোগ, "বিক্ষোভের আগে পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিজেদের দাবি নিয়ে কিছু জানায়নি বা কোনও দাবিপত্র জমা করেনি ।"

উপাচার্য মহম্মদ আলি জানান, 21 নভেম্বর তিনি একটি বৈঠকের জন্য বাইরে ছিলেন । ওইদিন দুপুর 2 টো নাগাদ কন্ট্রোলার অব এগজ়ামিনেশনের ঘরের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে পড়ুয়ারা । বিকেল 4 টে নাগাদ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তাঁর ঘরের বাইরে অবস্থান করে । সেই সময় তাঁর ঘর লাগোয়া একটি কনফারেন্স রুমে কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা বৈঠক করছিলেন । তাঁদেরও বের হতে দেয়নি ওই পড়ুয়ারা । সারারাত ধরে চলে ঘেরাও । 21 নভেম্বর রাতে দু'জন ফ্যাকাল্টি মেম্বার অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তাঁদের 22 নভেম্বর সকালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় ৷ উপাচার্য বলেন, "22 নভেম্বর সকালেও ঘেরাও চলে । ওইদিনই দুপুরে সব বিভাগের ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করি । সেখানেই সবাই সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন, এই নিয়মবিরুদ্ধ আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । 6 জন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করি আমরা ।"

কিন্তু, সাসপেনশনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে আরও তীব্র হয় পড়ুয়াদের বিক্ষোভ । উপাচার্যকে ক্যাম্পাস থেকে বের হতে দেয়নি তারা । জোর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট বন্ধ করে দেয় । সে সময় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয় । উপাচার্যের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে, অন্যান্য ফ্যাকাল্টি ও আধিকারিকদের ঘিরে পড়ুয়ারা অশ্লীল মন্তব্য করে ৷ সে সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ ডাকা হয় অ্যাম্বুলেন্স । কিন্তু, সেই অ্যাম্বুলেন্সও আটকে রাখে বিক্ষোভকারীরা ৷ অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে যান তিনি ৷

তিনদিন ধরে চলা এই বিক্ষোভের পুরো ঘটনা আজ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান উপাচার্য মহম্মদ আলি । তিনি বলেন, "সাসপেন্ড হওয়া ওই পড়ুয়াদের হস্টেল বোর্ডারশিপ বাতিল করা হয়েছে । গোটা ঘটনাটি নিয়ে ডিসিপ্লিনারি কমিটি তদন্ত করবে এবং উপযুক্ত শাস্তির সুপারিশ করবে । তারপরে বিষয়টি এগজ়িকিউটিভ কমিটিতে পেশ করা হবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ।" সাসপেন্ড হওয়া 6 জন পড়ুয়ার নাম মহম্মদ মিজানুর রহমান, সাহানুর খান, সৈয়দ জাভেদ হোসেন, মিজানুর রহমান, নাদিম আহমেদ ও জামাল শেখ । তারা কেউই 2 ডিসেম্বর থেকে যে সিমেস্টার পরীক্ষা শুরু হবে তাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details