মহাম্মদ আলি জিন্না, যিনি পাকিস্তানে কায়েদ-এ-আজম নামেই পরিচিত, প্রথম ঢাকা সফর করেন 1948-এর মার্চ মাসে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হিসাবে । তার ঠিক কয়েক মাস আগেই 1947 সালের 15 অগস্ট পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাজ্য হিসাবে ঘোষিত হয় ধর্মীয় ভিত্তিতে ৷
1958 সালের মার্চ মাসে জিন্না যখন ঢাকাতে পৌঁছান তখনই পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে । ওদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থিত জিন্নার পারিষদরা ইতিমধ্যেই উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্টীয় ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে, এই অজুহাতে যে পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু মানুষ উর্দুতেই কথা বলে । এই ঘটনা বাংলাভাষিদের আবেগের উপর একটা গুরুতর আঘাত হানে ।
ঢাকার ছাত্ররা একটা অ্যাকশন কমিটির গঠন করে এবং প্রাদেশিক আইনসভার মদতে তাঁদের এই ভাষা আন্দোলনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি পরবর্তীকালে মুক্তি আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন, সে সময়ে ছিলেন এক তরুণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব । তিনি সেই সময় ছাত্রদের আন্দোলনে সামিল হন এবং সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা নেন । 1952 সালের 21-এ ফেব্রুয়ারি সকালে হাজার হাজার ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জড়ো হন এবং 144 ধারা অমান্য করে তাঁরা প্রদেশের আইনসভার দিকে মিছিল রওনা হন । পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার গ্যাস ফাটায় ৷ শেষে গুলি পর্যন্ত চালায় । স্বাধীন পাকিস্তানের রাস্তায় সেদিন প্রথম রক্ত ঝরে । মৃত্যু হয় সালাম, রফিক, বরকত এবং জব্বারের মতো আরও অনেকের । পুলিশকে গুলি চালানোর হুকুম দেয় মুসলিম লিগ নেতা এবং মুখ্য়মন্ত্রী খোয়াই নাজিমুদ্দিন । বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ছাত্রদের রক্ত দিয়ে ।
আরও পড়ুন :একুশে ফেব্রুয়ারি কী ? উত্তর শুনলে লজ্জায় মাথানত হবে