দুর্গাপুর , 22 জুন : কবি বিষ্ণু দে বলেছিলেন, জীবন এক দীর্ঘশ্বাস ৷ সবার কাছে নয় ৷ তবে কারও কারও কাছে জীবন দীর্ঘশ্বাসই ৷ দেশ জুড়ে কোরোনা সংক্রমণের ফলে গরিব মানুষের কাছে এই দীর্ঘশ্বাস আরও দীর্ঘতর হচ্ছে ৷ জীবন আছে ৷ অথচ জীবিকা নেই ৷ দুমুঠো খেয়ে পেটের খিদে মেটাবে তার উপায় নেই ৷ পুরানো কাগজ, ভাঙাচোরা জিনিস ঘরে জমছে ৷ বাড়ির পাশ দিয়ে হকার ডাক দিচ্ছে, "পুরানো কাগজ, ভাঙাচোরা জিনিস দেবে গো" ৷ আওয়াজ শুনেও গৃহস্থ ডাকছে না হকারকে ৷ কোরোনা আতঙ্ক ৷ কোরোনা আতঙ্কে হকারকে বাড়িতে ডাকতে ভয় ৷ কাঁধে চটের ঝোলা নিয়ে ঘুরে ঘুরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাঁকডাক করেও অধিকাংশ দিন শূন্য হাতে ফিরত হচ্ছে তাদের ৷
হকাররা পুরানো বই খাতা পেপার কিনতে পারছে না গ্রাহকদের কাছে । হকাররা কিনতে পারছে না পুরনো বই, খাতা, পেপার , প্যাকিং বাক্স সহ কাগজের জিনিসপত্র। তাই গুদাম গুলিও একেবারে ফাঁকা। এই ব্যবসার সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষ আজ উপার্জনহীন হয়ে বিকল্প ব্যবসার কথা ভাবছে। পুরানো বই-খাতা-পেপার কাগজের তৈরি প্যাকিং বাক্স, বাড়ি বাড়ি ঘুরে কিনে নিয়ে আসে হকাররা ।এই কাজ করে এতদিন পর্যন্ত ওরা প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে দু'শো টাকা রোজগার করত । কিন্তু কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে বাড়ি বাড়ি ঢোকা বন্ধ। বাড়িতে পুরানো জিনিসপত্র কিনতে গেলে গৃহস্থের সাফ কথা, "এখন আসবেন না।" ওদের রুটি-রুজি তে টান পড়েছে। সেই সমস্ত সামগ্রী বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে কিনে এনে ওরা সেগুলি বিক্রি করত গুদাম মালিকদের কাছে। এখন আনলক ওয়ান পর্ব চলছে। দীর্ঘ লকডাউনে এক টাকাও রোজগার হয়নি । জমানো পুঁজি ভেঙে কোনও রকমে সংসার প্রতিপালন করেছে । এখন এদিক-ওদিক পড়ে থাকা কাগজপত্র কুড়িয়ে সারাদিনে 30 থেকে 40 টাকা আয় হচ্ছে । তাও আবার সবদিন হচ্ছেই না ।