দুর্গাপুর, 24 মে : রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর বাংলার কোটি কোটি মানুষ ৷ সেই কারণেই দিনে তিনবার নাগাল্যান্ড সরকারের ডিয়ার লটারির (Nagaland Government Dear Lottery) টিকিট কাটছেন অনেকে ৷ কারও ভাগ্য খুলছে ৷ কেউ আবার লটারির দোকানে হাজির হচ্ছেন নতুন করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ৷
কিন্তু সবক্ষেত্রে তা হচ্ছে কি ? গত কয়েকমাসে বারবার এই প্রশ্ন উঠেছে লটারির টিকিটের বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মধ্যে ৷ কেন এই প্রশ্ন উঠছে ? লটারির টিকিট বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল অধিকাংশ দিনই প্রথম পুরস্কার বা 9 হাজার টাকার পুরস্কার উঠছে অবিক্রিত টিকিটের উপর ৷ আর তা চলে যাচ্ছে সরকারের কাছে ৷ লটারির রেজাল্টের উপর লেখা থাকছে - রিটার্নড টু গর্ভনমেন্ট (Returned to Government) ৷
আরও পড়ুন :Lottery Win : শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে খুলল কপাল, লটারিতে এক কোটি টাকা মিলল নিরাপত্তারক্ষীর
সেই কারণেই লটারির বিক্রেতা থেকে ক্রেতা, সকলেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন ৷ আর রাজনৈতিক নেতারা এই নিয়ে কাঠগড়ায় তুলছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ৷ বিজেপি এই নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে ৷ আর সিপিএমের দাবি, এর দায় নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই (Mamata Banerjee Government) ৷
ঠিক কী ঘটছে ? লটারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নাগাল্যন্ড সরকারের এই ডিয়ার লটারি খেলা হয় দিনে তিনবার ৷ দুপুর 1টা, সন্ধ্যা 6টা ও রাত 8টা ৷ প্রতিটিতেই প্রথম পুরস্কার থাকে 1 কোটি টাকা ৷ এছাড়াও একাধিক পুরস্কার থাকে ৷ টিকিট শুরু হয় শূন্য সংখ্যা দিয়ে ৷ আর শূন্য সংখ্যা দিয়ে যে টিকিটগুলি শুরু হচ্ছে, তা নিয়ে দানা বেঁধেছে যত বিতর্ক ৷
দুর্গাপুরের এক টিকিট বিক্রেতা দীনেশ কমল লাহার দাবি, গত তিন চার মাস ধরে জিরো ব্যাকের টিকিট (শূন্য সংখ্যা দিয়ে শুরু টিকিট) পাওয়া যাচ্ছে না ৷ অথচ সেই টিকিটেই প্রথম পুরস্কার উঠছে প্রায়ই ৷ ফলে প্রতিটি টিকিট রিটার্নড টু গভর্নমেন্ট হয়ে যাচ্ছে ৷ একই বক্তব্য ওই এলাকার আরও এক লটারির টিকিট বিক্রেতা অনির্বাণ দে-র ৷ তিনি জানিয়েছেন, গ্রাহকরা এই বিষয়ে কিছু জানেনই না ৷
আরও পড়ুন :30 টাকার লটারির টিকিট কিনে কোটিপতি ভাতারের মাছ ব্যবসায়ী
স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, যে টিকিট বিক্রি হচ্ছে না ৷ সেই টিকিটে খেলা হচ্ছে কী করে ? কিন্তু এর কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে লটারির টিকিট বিক্রেতাদের দাবি ৷ কিন্তু তাঁদেরকেই গ্রাহকদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ৷ দুর্গাপুরের লটারির এক টিকিট বিক্রেতা দীপেন সরকার বলেন, ‘‘গ্রাহকরা এসে আমাদের কাছে এই প্রশ্ন করছেন, টিকিট বিক্রি না হলে কীভাবে প্রথম পুরস্কার উঠছে কী করে ? কিন্তু আমরা কোনও সদুত্তর দিতে পারছি না ৷’’
গ্রাহকরা তাই মনে করছেন যে তাঁরা লটারির টিকিট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ৷ দুর্গাপুরের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ সরকার নিয়মিত টিকিট কেনেন ৷ তিনি একটি লটারির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘টিকিট কাটছি ৷ কিন্তু পুরস্কার কিছুই হচ্ছে না ৷ গ্রাহক হিসেবে আমরা প্রতারিত হচ্ছি ৷’’