বসিরহাট, 6 মে : 22 মার্চ থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন ৷ বন্ধ রয়েছে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা ৷ ভিন রাজ্যে আটকে পড়েছেন শ্রমিকরা ৷ বন্ধ হয়ে গেছে শ্রমিকদের রোজগারও ৷ সঞ্চিত পয়সাও প্রায় শেষ ৷ এই কঠিন পরিস্থিতে ঘরমুখী হতে মরিয়া বেশিরভাগ শ্রমিক ৷ তাঁরা অসাধ্য সাধন করছেন , শুধু ঘরে ফেরার তাগিদে ৷ এবার সেই ছবি আরও স্পষ্ট করলেন বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবন এলাকার সাত জন শ্রমিক ৷ দুর্গাপুর থেকে 200 কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফিরলেন। সময় লাগল তিন দিন। গন্তব্যে পৌঁছে নিয়ম মেনে চলে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও ৷
ওই সাতজন শ্রমিকই বসিরহাটের সন্দেশখালি, ন্যাজাট, কালিনগর ও মেটেখালি গ্রামের বাসিন্দা ৷ তাঁরা সাত মাস আগে দুর্গাপুরে গিয়েছিলেন রাজমিস্ত্রির কাজের জন্য। কিন্তু লকডাউনের জেরে আটকে পড়েন সেখানেই । তাছাড়াও লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় রোজগারও ৷ ঠিকাদারকে বলা সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি।
40 দিনের বেশি সময় কেটে গেলেও তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না। অবশেষে সিদ্ধান্ত নেন, দুর্গাপুর থেকে প্রায় 200 কিলোমিটার পথ হেঁটে বসিরহাট ফিরবেন। সেই মতো হেঁটে বসিরহাটের উদ্দেশে পাড়ি দেন ওই শ্রমিকরা। বসিরহাটে পৌঁছাতে তাঁদের মোট সময় লাগল তিন দিন।
গ্রামে পৌঁছানোর পরই সাতজন শ্রমিক নিজেরাই সরাসরি বসিরহাট জেলা হাসপাতালে গিয়ে নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। কোনও বিশেষ অসুবিধা না থাকায় হাসপাতাল থেকে তাঁদেরকে একটি ইঞ্জিন ভ্যান গাড়িতে করে ন্যাজাট থানায় পাঠানো হয়। এই বিষয়ে ন্যাজাট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিস্তারিত রিপোর্ট দেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। সেই মতো সাতজন শ্রমিকেই 14 দিনের হোম কোয়ারানটিন থাকার নির্দেশ দেয় ন্যাজাট থানার পুলিশ।
পাশাপাশি তাঁদের জন্য প্রতিদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং খাদ্যেরও ব্যবস্থা করা হবে ৷ শেষ পর্যন্ত সুন্দরবনের শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় খুশি তাঁদের পরিবারও। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে এখন চিন্তামুক্ত শ্রমিকদের পরিবারাও ।