বর্ধমান, 10 অক্টোবর : সকাল সকাল বর্ধমান থানায় গিয়ে এক যুবকের স্বীকারোক্তি "আমি টুটুলকে খুন করেছি ৷ " শুনে প্রথমে ধন্দে পড়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা ৷ পরে ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে স্পষ্ট হয় বিষয়টি ৷
গতরাতে বর্ধমানের আলমগঞ্জের একটি রাইস মিলের সামনে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরই এক সহকর্মী ৷ আক্রান্ত যুবকের নাম টুটুল মণ্ডল (20) ৷ সজল (টুটুলের সহকর্মী) পুলিশে খবর দেন ৷ বর্ধমান থানার পুলিশ টুটুলকে উদ্ধার করে ৷ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ আজ সকাল হতেই বর্ধমান থানায় গিয়ে বিকাশ গড়াই নামে এক যুবক জানান তিনিই টুটুলকে খুন করেছেন ৷
পুলিশ সূত্র খবর, বিকাশ ও টুটুল দু'জনেরই বাড়ি বীরভূমের সাঁইথিয়ার কাতুলী গ্রামে ৷ ছোট থেকেই তারা বন্ধু ৷ বিকাশ আলমগঞ্জের ওই রাইস মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন ৷ দশ মাস আগে তিনিই টুটুলকে ওই রাইস মিলে নিয়ে আসেন । টুটুলও প্রথমে শ্রমিক হিসেবেই কাজ করতেন ৷ কিন্তু লেখাপড়া জানতেন তাই তাঁর পদোন্নতি হয় । তাঁর সুপারভাইজার পদে প্রমোশন হয় । এরপরেই তাঁর সঙ্গে বিকাশের মনোমালিন্য শুরু হয় । এমনকি এই নিয়ে দু'জনের মধ্যে বেশ কয়েকবার ঝামেলা হয় । পুজোতে বাড়ি গেলেও দশমীর দিন টুটুল বর্ধমানের রাইস মিলে ফিরে আসেন ৷ এদিকে পুজোয় পাঁচদিনের জন্য বন্ধ ছিল মিল ৷ তাই গতরাতে টুটুল সহকর্মী সজলের সঙ্গে গল্প করছিলেন ৷ সে সময় তাঁকে ফোন করেন বিকাশ । টুটুল সজলকে জানান তিনি বিকাশের Paytm অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জন্য যাচ্ছেন ৷ কিন্তু রাতের দিকে সজল টুটুলকে খেতে যাওয়ার ডাকতে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি পড়ে আছেন ৷ মাথা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ৷ এরপরই পুলিশে খবর দেন ৷
পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায় জানান, গতরাতে রাইস মিল থেকে মরণাপন্ন অবস্থায় এক যুবককে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল । সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় । ঘটনায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ । আজ সকালে বিকাশ গড়াই নামে এক যুবক থানায় এসে টুটুলকে খুনের কথা স্বীকার করেন । বিকাশ পুলিশকে জানিয়েছেন রাগের মাথায় মত্ত অবস্থায় তিনি টুটুলকে খুন করেছেন । রাতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য বর্ধমান থানায় গিয়েছিলেন বিকাশ । কিন্তু ভয় পেয়ে ফিরে যান ৷ পরে তাঁর অনুশোচনা হয় ৷ আজ সকালে তাই নিজেই ধরা দেন ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷