মেমারি, 8 জুলাই : তখনও ভোরের আলো ফোটেনি । মেমারির স্টেশন লাগোয়া মাছের পাইকারি বাজারে তখন রীতিমতো ভিড় । রুই, কাতলা, ভেটকি, গলদা চিংড়ি হাতে নিয়ে দাম হাঁকছেন মুখ চেনা এক যুবক । তবে মাছ বিক্রির জন্য নয়, টেলিভিশনের সুবাদে ৷ তাঁকে একডাকে সবাই 'খোকা' বলেই চেনে । আসল নাম অরিন্দম প্রামাণিক ৷ সুবর্ণলতা মেগা সিরিয়ালে 'খোকা' চরিত্রে অভিনয়ের দরুণই এই পরিচিতি ৷
লকডাউনের জেরে টলি-পাড়ায় কাজ নেই ৷ তাই কলকাতার আস্তানা ছেড়ে বর্ধমানের মেমারির সোমেশ্বরতলার বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন অরিন্দম । বাড়িতে আছেন বাবা-মা-স্ত্রী । বাবা সবজি বিক্রেতা । লকডাউনের কাজ নেই, তাই উপার্জনও নেই ৷ সংসারের অভাব ঠেকাতে তাই মাছের ব্যবসায় নামতে বাধ্য হয়েছেন অরিন্দম । লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের স্ত্রিপ্ট বদলে গিয়েছে রুই-কাতলা-ভেটকিতে ।
একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় অভিনেতা চন্দন সেনের হাত ধরে অভিনয়ের জগতে প্রবেশ ৷ 2011 সালে মেগা সিরিয়াল 'সুবর্ণলতা'-র 'খোকা' চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আসে ৷ মুখ চেনা হয় টলি-পাড়ায় ৷ এরপর রাশি, অগ্নি পরীক্ষার মতো মেগা সিরিয়ালেও শিকে ছেঁড়ে ৷ পাশাপাশি দু-একটা সিনেমাতেও ছোটখাটো চরিত্র জুটে যায় ৷ অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ বসু ছাড়াও সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন অরিন্দম ৷ ক্রমশ কাজ এবং পরিচিতি দুই-ই বাড়ছিল ৷ আরও ভাল কাজের আশায় লেগে থাকে অরিন্দম । চলছিল মোটামুটি ভালই ৷ কিন্তু বাধ সাধল করোনা ৷
অরিন্দমের বাবা অলোক বলেন, "ছেলের স্বপ্ন ছিল অভিনয় করার । ভালোই অভিনয় করছিল । কিন্তু হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে কাজ বন্ধ গেল ৷ তারপর ছেলে বাড়ি ফিরে আসে । আমার দোকানে মাছের ব্যবসা শুরু করে । তবে যদি কোনও দিন ফের সুযোগ পায় অরিন্দম ফিরে যাবে অভিনয়ের জগতে ।"