ইসলামপুর, 4 নভেম্বর : সোনা-রুপোর সমস্ত অলঙ্কার সমেতই বিসর্জন দেওয়া হয় ঋষিপুরের ডাকাত কালীকে ৷ প্রাচীনত্বের সঠিক হিসাব বা কালীর পরিচয় ঋষিপুরের প্রবীণরাও দিতে পারেননি । কারও মতে, ডাকাত কালী নামে পরিচিত এই পুজো 600 বছরের প্রাচীন ৷ আরও এক বৈশিষ্ট্য হল, গ্রামের মুসলিম বাড়ি থেকে গুড় এনে পুজোয় ব্যবহার করা হয় ৷
শোনা যায়, সেসময় ঘন জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় ডাকাতরা কালী সাধনা করেই ডাকাতি করতে বের হত । আবার অনেকের মতে, মন্দিরের সামনের বিশাল বিলে জেলোরা মাছ ধরতে নামার আগে কালী সাধনা করতেন । রাতেই মূর্তি তৈরি করে রাতেই বিসর্জন দেওয়া হত বিলের জলে । সকালে গ্রামবাসীরা প্রাচীন বট গাছের নীচে ফুল, বেলপাতা, সিঁদুর পড়ে থাকতে দেখেছেন । কিন্তু মূর্তি কেউ দেখতে পাননি । তাই অনেকের মতে, এটা ডাকাত কালী আবার কারও কারও মতে বিল কালী । নাম যাই হোক না কেন, আজও কোনও আড়ম্বর, শোভাযাত্রা ছাড়াই নিশুতি রাতে বিলের জলে বিসর্জন দেওয়া হয় ঋষিপুরের কালী । শুধু তাই নয়, এখানে পুজো হয় স্থানীয় এক মুসলিম পরিবার থেকে আসা আখের গুড় দিয়ে ৷ একবার মুসলিম সম্প্রদায়ের এক আখের গুড় বিক্রেতা মন্দিরের কাছে বটতলায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় বড়মার স্বপ্নাদেশ পান ৷ বড়মা গুড় খেতে চান তাঁর কাছে । তারপর থেকে আজও সেই মুসলিম পরিবার থেকে আখের গুড় আসে পুজোয় ।
এখানে কালী বড়মা নামে পরিচিত ৷ এই বড়মার গায়ের সমস্ত গয়না, তা সে সোনারই হোক বা রুপোর, বিসর্জন দেওয়ার প্রথা আজও চলে আসছে । স্থানীয়দের দাবি, প্রতিমা বিসর্জনের পর বিলের জলে নেমেও কেউ কোনদিন কোনও গয়না তুলে আনতে পারেনি । অতি জাগ্রত এই কালীর মাহাত্ম্য এখন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে । পুজোর রাতে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চণ্ডীগড় থেকেও ভক্তরা আসেন মানসিক নিয়ে ।