পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

Adhir Ranjan Chowdhury: 10 বছরেও নন্দীগ্রাম গণহত্যায় সাজা হল না কেন, মমতাকে প্রশ্ন অধীরের

বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই নন্দীগ্রাম নিয়ে লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে মমতাকে ৷ শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁকে এবং তাঁর বাবা শিশির অধিকারীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন মমতা । 2007 সালের 14 মার্চ ‘বাপ-ব্যাটা’র অনুমতিতেই পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ করেন মমতা ৷

Adhir Ranjan Chowdhury takes dig at Mamata Banerjee over Nandigram Firing case
নন্দীগ্রাম দিবসে মমতাকে বিঁধলেন অধীর ।

By

Published : Nov 11, 2021, 4:54 PM IST

বহরমপুর, 11 নভেম্বর: বাংলার মসনদে শাসকের রদবদল ঘটিয়েছিল জমি-আন্দোলন । তার পর দেড় দশক কেটে গিয়েছে । বর্তমানে রাজনীতের বোড়ে হওয়া ছাড়া, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সংগ্রামী ইতিহাস কার্যত বিস্মৃত হওয়ার পথে । তা নিয়ে এবার সরব হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী । তাঁর প্রশ্ন, জমি আন্দোলনের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ক্ষমতায় । তা সত্ত্বেও, 14 বছরে নন্দীগ্রাম গণহত্যায় দোষীদের শাস্তি হল না কেন ?

প্রতিবছর 10 নভেম্বর দিনটিকে নন্দীগ্রাম দিবস হিসেবে পালন করে তৃণমূল । বুধবার সেই নন্দীগ্রাম দিবসেই তৃণমূল নেত্রী মমতার দিকে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়ে দেন অধীর । বহরমরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনে ভর করেই রাজ্যে ক্ষমতায় তৃণমূল ৷ কিন্তু নন্দীগ্রামে নিহতদের পরিবারগুলি কি আজও বিচার পেয়েছেন ? কৃষকদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল যারা, তাদের বিরুদ্ধে মামলা সাজানোর কোনও উদ্যোগ কি নিয়েছে তৃণমূল সরকার ? তাদের কাউকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে ? কেউ কি শাস্তি পেয়েছে ?’’

এখানেই থামেননি অধীর ৷ সরাসরি মমতাকে নিশানা করেন তিনি ৷ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘14 বছর কেটে গিয়েছে । এখনও নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর জন্য কেউ শাস্তি পায়নি ৷ গত 10 বছর ধরে দিদির শাসন চলছে ৷ এই দশ বছরে কি সকলে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে ?’’

আরও পড়ুন:Anubrata - Srabanti : "জঞ্জাল বিজেপিতে মহিলা হয়ে কি করে থাকবে ", শ্রাবন্তীর দল ছাড়ায় মন্তব্য অনুব্রতর

কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করে রাসায়নিক কারখানা গড়ে তোলার বিরুদ্ধে দেড় দশক আগে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সূচনা ৷ তৎকালীন বাম সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন তৃণমূলের নেতৃত্বে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা ৷ সেই সময় 2007 সালের 14 মার্চ পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ বাধে ৷ তাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় 14 জন কৃষকের ৷ যদিও নন্দীগ্রামে কমপক্ষে 50 জন মারা গিয়েছিলেন বলে বরাবরের দাবি তৃণমূলের ৷

এরপর ওই বছরই নভেম্বর মাসে ভূমি উচ্ছেদ কমিটি কর্তৃক গ্রামছাড়া হওয়া বামপন্থী মানুষজন গ্রামে ফিরতে শুরু করলে 10 নভেম্বর নতুন করে হিংসা দেখা দেয় নন্দীগ্রামে ৷ ওই ঘটনাকে তৎকালীন বাম সরকার নন্দীগ্রামে ‘সূর্যোদয়’ বলে আখ্যা দিয়েছিল ৷ রাজ্য প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় করে রেখে সিপিএম-ক্যাডাররা এই অভিযান চালায় বলে অভিযোগ ওঠে ৷ সেবারও গুলি চলার ঘটনা সামনে আসে ৷

সেই থেকেই প্রতি বছর 10 নভেম্বর দিনটিকে নন্দীগ্রাম দিবস হিসেবে পালন করে জোড়াফুল শিবির ৷ 14 মার্চ দিনটি পালিত হয় কৃষক দিবস হিসেবে ৷ জমি আন্দোলনের সেই ইতিহাসকে সামনে রেখেই বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হন মমতা ৷ কিন্তু এককালের সহযোদ্ধা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি ৷ নন্দীগ্রাম দিবসে গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে তুলে প্রশ্ন করে এবার মমতাকে বিঁধলেন অধীরও ৷

আরও পড়ুন: Kunal Ghosh :কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা অধিকারীদের

বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই নন্দীগ্রাম নিয়ে লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে মমতাকে ৷ শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁকে এবং তাঁর বাবা শিশির অধিকারীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন মমতা । 2007 সালের 14 মার্চ ‘বাপ-ব্যাটা’র অনুমতিতেই পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ করেন মমতা ৷ শুধু তাই নয়, পুলিশের পোশাকে হাওয়াই চটি পরা দুষ্কৃতী ঢুকিয়ে গণহত্যা চালানোর দায়ও শিশির এবং শুভেন্দুর উপরই চাপান তিনি ৷

কিন্তু মমতার এই অভিযোগে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটে ৷ অসুস্থতা উপেক্ষা করেই এনিয়ে সরব হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ৷ বছরের পর বছর নন্দীগ্রামে গণহত্যার দায় বয়ে বেড়াতে হয়েছে তাঁকে ৷ জমি রক্ষা আন্দোলনের পিছনে আসলে ‘কুটিল চিত্রনাট্য’ সাজানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷ যুবসমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ কেড়ে নিয়ে তৃণমূল আসলে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করেছে বলে দাবি করেন তিনি ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details