পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

ETV ভারতের প্রতিনিধির সহায়তায় হাসপাতালে পৌঁছে রক্ত দিলেন যুবতি

লকডাউনের মধ্যে রক্তদান করতে ETV ভারতের প্রতিনিধির সহযোগিতায় আসানসোল জেলা হাসাপাতালে পৌঁছে গেলেন বার্নপুরের এক যুবতি ।

লকডাউনেও হাসপাতালে রক্ত দিতে পৌঁছালেন যুবতি
লকডাউনেও হাসপাতালে রক্ত দিতে পৌঁছালেন যুবতি

By

Published : Mar 30, 2020, 2:52 PM IST

আসানসোল, 30 মার্চ : সুনসান রাস্তা । লোকজন প্রায় নেই বললেই চলে । মাঝেমধ্যে চলছে পুলিশি টহল । জমায়েত দেখলেই লাঠি নিয়ে তেড়ে যাচ্ছে পুলিশ । আর এই অবস্থাতেই বাইকে করে অনায়াসে হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন এক যুবতি । তবে নিজের প্রয়োজনে নয় । রক্ত সংকটের কথা শুনে মুমূর্ষ রোগীদের জন্য রক্তদান করতে । পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে ধরা পড়ল এই ছবি ।

আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে । সেই খবর জানতে পেরে সরাসরি ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্তদানের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বার্নপুরের বাসিন্দা প্রিয়া চট্টোপাধ্যায় । কিন্তু লকডাউনের জেরে বার্নপুর থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব ছিল । ETV ভারতের প্রতিনিধির সহায়তায় ওই যুবতি বাড়ি থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পৌঁছান । রক্তদান করেন । এবং বাড়ি ফিরে আসেন ।

বার্নপুর পুরানোহাটের বাসিন্দা প্রিয়া জানতে পেরেছিল ব্লাড ব্যাঙ্কে AB পজ়িটিভ ব্লাড একেবারেই নেই । তাঁর নিজেরও ব্লাড গ্রুপ AB পজ়িটিভ । ফেসবুকে আসানসোলের একটি গ্রুপে তিনি লিখেছিলেন, "আমি রক্ত দিতে চাই । " সেই পোস্ট দেখে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাঁকে সরাসরি সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন । কারণ এখন ব্লাড ক্যাম্প তেমন ভাবে হচ্ছে না । ন্যানো ক্যাম্প হলেও সেখানে ভিড় করা যাবেন না । তাই জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্তদান করবেন বলে স্থির করেন প্রিয়া। কিন্তু তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে জেলা হাসপাতাল । অনেকের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । কেউই পুলিশের ভয়ে এগিয়ে আসেননি । এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে যান ETV ভারতের পশ্চিম বর্ধমানের প্রতিনিধি তারকনাথ চট্টোপাধ্যায় । তিনি প্রিয়াকে জানান, তাঁর বাইকে চাপতে আপত্তি না থাকলে তিনি তাঁকে সাহায্য করতে পারেন ।

ETV ভারতের প্রতিনিধির সঙ্গেই হাসপাতালে যান প্রিয়া । রক্ত দেন । ঘণ্টাখানেক পর তাঁর বাইকে চড়েই বাড়ি ফিরে আসেন । এ বিষয়ে ETV ভারতের ওই সাংবাদিক বলেন, “শুধুমাত্র যোগাযোগের অভাবে কেউ এতবড় কাজ করতে গিয়েও করতে পারবেন না, তা মেনে নিতে পারিনি । তাই কাজের ফাঁকে তাঁকে সহযোগিতা করেছি । অনেকেরই এভাবে এই কঠিন সময়ে এগিয়ে আসা উচিত।"

প্রিয়া বলেন, "আমি ETV ভারতের ওই প্রতিনিধির সহায়তা না পেলে পৌঁছাতেই পারতাম না । অনেক ধন্যবাদ । আপনারা শুধুই খবর করেন না, মানুষের পাশেও থাকেন ।"

আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিকেল অফিসার সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এই পরিস্থিতিতে একবুক তাজা অক্সিজেন দিয়ে গেছে এই ঘটনা । অনেককেই উদ্বুদ্ধ করবে প্রিয়ার এই এগিয়ে আসা । সঙ্গে সাংবাদিকের এমন ভূমিকাকেও শুভেচ্ছা জানাই ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details