পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

দামোদরের জলে "বিষ", বিপন্মুক্ত পানীয়ের খোঁজে আসানসোল - আসানসোল

ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন কলকারখানার রাসায়নিক এসে মিশছে দামোদর নদীতে । আর সেই জলই আসানসোল পৌরনিগমের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশুদ্ধ হচ্ছে । ওই জল রাসায়নিক মুক্ত নয়, বলছেন চিকিৎসকরা ৷ আসানসোল পৌরনিগমের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য অন্য কথা বলছেন ৷

asansol-in-search-of-pure-water
asansol-in-search-of-pure-water

By

Published : Dec 14, 2020, 8:30 PM IST

আসানসোল, 14 ডিসেম্বর: কারখানার দূষিত রাসায়নিক এসে মিশছে দামোদরের জলে । সেই জল পরিশুদ্ধ করে বিস্তীর্ণ এলাকায় পৌঁছানোই চ্যালেঞ্জ আসানসোল পৌরনিগমের । রয়েছে বেশ কয়েকটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট । তাতে কীভাবে কাজ হয় ? আদৌ কি পরিশুদ্ধ হচ্ছে পানীয় জল ? খোঁজ নিল ইটিভি ভারত ।

আসানসোলের বিস্তীর্ণ শহরে পানীয় জল সরবরাহের জন্য আসানসোল পৌরনিগমের 3টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট রয়েছে । একটি কালাঝরিয়াতে, একটি ভূতাবুড়িতে এবং আরেকটি ডিহিকাতে । এর মধ্যে কালাঝরিয়া ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সবচেয়ে পুরোনো । পরবর্তীকালে শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন জল প্রকল্প তৈরি হয় ডিহিকাতে এবং ভূতাবুড়িতে । বর্তমানে আরেকটি বড় ভূগর্ভস্থ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলছে ভূতাবুড়িতে । এই 3টি জলপ্রকল্প থেকে আসানসোল শহর ও শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জল সরবরাহ হয় । অন্যদিকে কুলটি এলাকায় নতুন জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছে যা কুলটি এলাকাতেই জল সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে । মূলত মাইথন জলাধারের জমা জল ছাড়া হয় যা দামোদর নদী দিয়েই আসে । এই জলেই পানীয় জলের সুব্যবস্থা হয়ে থাকে । ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জল সমস্যা মেটানোর জন্য প্রতিদিন 23 হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয় । কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কতটা পরিশুদ্ধ জল পাচ্ছেন আসানসোলের মানুষ ? অভিযোগ উঠছে, ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন কলকারখানার রাসায়নিক এসে মিশছে দামোদর নদীতে । আর সেই জলই আসানসোল পৌরনিগমের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশুদ্ধ হচ্ছে ।

বিশুদ্ধ জলের খোঁজে আসানসোল পৌরনিগম ৷

পৌরনিগমের জল বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পরিষদ তথা বর্তমান প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পূর্ণশশী রায় জানিয়েছেন, "আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে কারখানার রাসায়নিক জলে দূষিত দামোদরের জলকে পরিশুদ্ধ করতে । এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করছি ।" যদিও রাসায়নিক মেশা দূষিত দামোদরের জল কোনও ভাবেই পরিশুদ্ধ করা সম্ভব নয়, বলছেন আসানসোলের বিশিষ্ট চিকিৎসক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।

কল্যাণবাবুর দাবি, "ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে জলকে ব্যাকটিরিয়া মুক্ত করা যেতে পারে । রাসায়নিক মুক্ত নয় । আর এই রাসায়নিক যুক্ত জল খেয়ে ব্রেন টিউমার সহ বিভিন্ন চর্মরোগ এমনকী ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে ।"

আসানসোলের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট৷

ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশুদ্ধ জল নিয়ে আসা হয় দামোদর থেকে, বিশেষ পদ্ধতিতে । পাল্টা দাবি করলেন আসানসোল পৌরনিগমের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আর কে শ্রীবাস্তবের । তিনি জানিয়েছেন, নদীবক্ষে কূপ তৈরি করা হয়েছে । পাশাপাশি ডিপ টিউবওয়েল বসানো হয়েছে । নদী গর্ভের ভিতর থেকে জল তুলে তা ওই গভীর কূপে ফেলা হয় । সেখানেই বিশেষ পদ্ধতিতে পরিশুদ্ধ করে জল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে নিয়ে আসা হয় । যেহেতু নদীর গর্ভে ডিপ টিউবওয়েল লাগিয়ে আরও গভীর থেকে জল তোলা হয়, সেখানে নদীতে ভেসে আসা রাসায়নিক যাওয়ার সম্ভবনা নেই ।"

চিকিৎসকরা কিন্তু মাঝেমধ্যেই জলের নমুনা পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন । যাতে নিশ্চিত ভাবে জেনে নেওয়া যায়, মানুষ পরিশুদ্ধ জলই পাচ্ছেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details