পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

ব্রেন ডেথ, সন্তানের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত রানিগঞ্জের দম্পতির

পথ দুর্ঘটনায় ব্রেন ডেথ হয়েছে ছেলের ৷ ছেলের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত দম্পতির ৷ আশা অনেকের মধ্যে বেঁচে থাকবেন তাঁদের একমাত্র সন্তান ৷

সৌরনীল ঘোষ

By

Published : Aug 8, 2019, 9:41 AM IST

Updated : Aug 8, 2019, 3:43 PM IST

রানিগঞ্জ, 8 অগাস্ট : একমাত্র ছেলে ৷ পথ দুর্ঘটনায় তাঁর ব্রেন ডেথ হয়েছে ৷ চোখের কোণে জল নিয়েই ছেলের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিলেন রানিগঞ্জের সন্তানহারা ওই দম্পতি ৷ আশা অনেকের মধ্যে বেঁচে থাকবেন তাঁদের একমাত্র সন্তান ৷

সৌরনীল ঘোষ (19) ৷ তামিলনাড়ুর ভোলোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলেজিতে লেখাপড়া করছিলেন তিনি ৷ গত শনিবার বন্ধুদের সঙ্গে মোটরবাইকে বেরিয়ে ত্রিবান্তপুরামে একটি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন । স্থানীয় পুলিশ তাঁকে প্রথমে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ পরে সেখান থেকে তাঁকে ভেলোরে CMC হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । খবর পেয়ে ওই দিনই রানিগঞ্জ থেকে ভেলোরে ছুটে যান সৌরনীলের বাবা সোমনাথ ঘোষ ও মা চন্দনা ঘোষ । সঙ্গে যান সোমনাথবাবুর বন্ধু কৌশিক শ্যাম রায় । কৌশিকবাবু জানান, চিকিৎসকদের বক্তব্য, অ্যাবডোমেনে অধিক রক্তক্ষরণের ফলে টিশু শুকিয়ে গেছে সৌরনীলের । শরীর থেকে আড়াই লিটার রক্ত বেরিয়ে যায় ৷ পরে তাই বাইরে থেকে রক্ত দিয়েও সেটা সামাল দেওয়া যায়নি । এরপরও সৌরনীলকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা চেষ্টার খামতি রাখেনি ৷ কিন্তু চিকিৎসায় সেরকম কোনও সাড়া দেয় সৌরনীল । অবশেষে তাঁর ব্রেন ডেথ হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা ৷ খবর পাওয়ার পর পরিবার তাঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয় ৷ সেইমতো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতারাতি সেই ব্যবস্থা করে দেন । অঙ্গদানের পরেই প্রথম সৌরনীলের হৃদযন্ত্র তামিলনাড়ু পুলিশের তৎপরতায় গ্রিন করিডর তৈরি করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিস্থাপনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ৷

দেখুন ভিডিয়ো

সোমনাথবাবুর বাড়ি রানিগঞ্জের বল্লভপুরে ৷ তিনি BCL-এর কর্মী । বরাকরে কর্মরত । সৌরনীলের মা চন্দনা ঘোষ বল্লভপুর বেলুনিয়া গ্রামীণ হাসপাতালের নার্স । সৌরনীল রানিগঞ্জের SKS পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন ৷ 2018 সালের ১০ জুলাই ভেলোর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিক্যাল কলেজে ভরতি হন ।

আরও পড়ুন : রাজ্যে তিন তালাক অব্যাহত, এবার বিবিকে পিটিয়ে খুন !

কৌশিকবাবু জানান, চিকিৎসকরা ব্রেন ডেথ ঘোষণার পরই সৌরনীলের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপনে সায় দেন তাঁর বাবা- মা ৷ তাঁরা চান, তাঁদের ছেলে আরও অনেকের মধ্যে বেঁচে থাকুক । বৃহস্পতিবার তাঁরা ভেলোর থেকে রানিগঞ্জ ফিরবেন ৷

এবিষয়ে সোমনাথবাবু বলেন," হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছেলের ব্রেন ডেথ ঘোষণা করে । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে চায় আমরা ছেলের অঙ্গদান করব কি না ? আমরা বলি , হ্যাঁ করব ৷ কারও কাজে লাগবে ৷ কেউ যদি অঙ্গগুলি পেয়ে বেঁচে যান তাহলে তাঁর মধ্যে ছেলের আত্মা বেঁচে থাকবে ৷ " চন্দনা ঘোষ বলেন, "আমার যা যাবার চলে গেল কিন্তু যাতে অন্য কোনও মায়ের কোল খালি না হয় তার জন্য আমার ছেলের অঙ্গদান করলাম ৷ বাড়ি থেকে এত দূরে ছেলেকে পাঠানো শুধুমাত্র একটাই কারণে যে ওই ইনস্টিটিউটি ছিল র‌্যাগিং ফ্রী ৷"

Last Updated : Aug 8, 2019, 3:43 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details