আসানসোল, 15 নভেম্বর : আসানসোল শহরের একমাত্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রবীন্দ্র ভবন। তার ঠিক উল্টো দিকেই সুরেশের চায়ের দোকান। শহরে কফি হাউস যতই থাক, আসানসোলের কবি-শিল্পী কিংবা বুদ্ধিজীবিদের বিশেষ পছন্দ সুরেশের চা। এর আগে সুরেশের নাম গানে-কবিতায় বারেবারে এসেছে। কিন্তু এবারের সম্মানটা নিঃসন্দেহে আরও স্পেশ্যাল হয়ে থাকবে সুরেশের কাছে ৷ রবিবার আসানসোল শহরের নাট্য উৎসবের উদ্বোধন করলেন সবার প্রিয় সুরেশ পাসোয়ান।
এদিন আসানসোল রবীন্দ্রভবনে 'প্রত্যয়ী' নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করেছিল নাট্য উৎসবের। দীর্ঘ করোনাকালকে পাশ কাটিয়ে প্রথমবার মঞ্চে ফিরলেন কলাকুশলীরা। এদিন চারটি নাটক অভিনীত হয় আসানসোল রবীন্দ্রভবন মঞ্চে। আর এই নাট্য উৎসবেরই সূচনা হয় সুরেশ পাসোয়ানের হাত ধরে। তাঁকে শ্রদ্ধায় বরণ করেও নেওয়া হয় আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে।
সুরেশ কোনও শিল্পী, কবি, বুদ্ধিজীবি নন ৷ তবে এই শহরের শিল্পীদের যেন লালিত করেছেন সুরেশ। তাঁর একচিলতে চা দোকানেই লেখা হয়েছে কত কবিতা ৷ চায়ের কাপে তুফানেই উঠে এসেছে অসংখ্য নাটকের স্ক্রিপ্ট ৷ স্বভাবতই এই সম্মান সুরেশের প্রাপ্য বলে জানাচ্ছেন আসানসোলের শিল্পীসংঘ। বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী জ্যোতির্ময ভট্টাচার্য জানান, "সুরেশ দা আমাদের লালন করেছেন। তাঁর যা ব্যবহার তাতেই মন ভাল হয়ে যায়। শহরের সমস্ত মানুষ সুরেশের চায়ের দোকানে আড্ডার জন্যই মুখিয়ে থাকে। আনন্দ হচ্ছে প্রত্যয়ী সুরেশদাকে সম্মান জানাল বলে।”
এক চা বিক্রেতার হাতে নাট্য উৎসবের সূচনা আরও পড়ুন : হাতির হানায় জেরবার আলিপুরদুয়ারের তুরতুরি গ্রাম
আর যাঁকে নিয়ে এত কথা তিনি কী বলছেন ? সম্মান পেয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সুরেশ নিজেও। তিনি বলছেন, “সবাই আমার কাছে চা খেতে আসেন। অনুষ্ঠান হলে আমিও পৌঁছতে যাই। সেই থেকে সবার সঙ্গে আলাপ, বন্ধুত্ব। চা পৌঁছতে গিয়ে আমিও নাটক দেখতে বলে যেতাম। আজ আমার হাত দিয়ে উদ্বোধন হল নাটকের। খুব ভাল লাগছে।”