দেওলিয়া ও শোধক্ষমতা সংহিতা (ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপটসি কোড - IBC) 2016 সালের 28 মার্চ আইনে পরিণত হয়েছে এবং সেটি পুরোপুরিভাবে কার্যকর হয়েছে সেই বছরের ডিসেম্বরে । দেওলিয়া ও শোধক্ষমতা পর্ষদ (Insolvency and Bankruptcy Board of India - IBBI) গঠিত হয়েছে 2016 সালের অক্টোবরে । দেওলিয়া ও শোধক্ষমতা সংহিতা তৈরি করা হয়েছে যাতে ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে ব্যাঙ্ক দ্রুত তাদের পাওনা টাকা উদ্ধার করতে পারে । অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করার জন্য একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেয় । সেক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধের জন্য প্রতিটি ব্যাঙ্ক আলাদা আলাদা করে যাতে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা না দিয়ে একসঙ্গে চাপ দেয় সেটা নিশ্চিত করে IBC । যদিও সমস্যা অনেক, তা সত্ত্বেও গত তিন বছরে IBC ঋণের টাকা উদ্ধারে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে । IBC-র উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হল, দেওলিয়া ও ঋণ শোধে অক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়গুলি তারা 270 দিন অর্থাৎ প্রায় তিন মাসের মধ্যে সমাধান করে থাকে । এর সুফল হল, ধূর্ত ব্যক্তিরা ঋণ পরিশোধের বিষয়টি অনির্দিষ্টকালের জন্য এড়িয়ে যেতে পারে না।
অর্থনীতির উন্নতিতে ব্যবসা বাণিজ্যের ভূমিকা গুরত্বপূর্ণ । কিন্তু তা তখনই সম্ভব যখন কোনও ব্যক্তি ব্যবসা করার জন্য সহজে ঋণ পেতে পারবেন এবং ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলি সহজে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই ঋণ সুদে আসলে আদায় করতে পারবে । বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির দেশগুলিতে ব্যবসায় ঋণদানের কাজটি মূলত করে বন্ড (ঋণপত্র) মার্কেট । কিন্তু ভারতে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়টি সেভাবে সাফল্য পায়নি । তার অন্যতম কারণ আমাদের দেশে ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলি ঋণ হিসেবে প্রদেয় অর্থ সুদে আসলে সহজে আদায় করতে পারে না । যদি ঋণগ্রহীতা অর্থ পরিশোধে অক্ষম হয় সেক্ষেত্রে মামলাটির আদালতে বিচার হয় । কিন্তু ভারতে পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে আদালতগুলিতে মামলার নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ দিন কেটে যায় । এই প্রসঙ্গে একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হল ভারতে বর্তমানে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় 3.3 কোটি ।